Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Death

নিরাপত্তা ছাড়া কাজ, চাঙড় চাপা পড়ে মৃত্যু শ্রমিকের

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সাবিরুল ইসলাম (৫০)। তিনি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা।

মর্মান্তিক: নির্মাণকাজ চলার সময়ে বাড়ির একাংশ ভেঙে চাপা পড়েন এক শ্রমিক। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবার, নিউ আলিপুরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

মর্মান্তিক: নির্মাণকাজ চলার সময়ে বাড়ির একাংশ ভেঙে চাপা পড়েন এক শ্রমিক। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবার, নিউ আলিপুরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:১০
Share: Save:

রঙিন জ্যাকেট, হেলমেট, কোমরে বাঁধার দড়ি— কিছুই ছিল না। ছিল না প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থাও। শুক্রবার নিউ আলিপুরে একটি নির্মাণস্থলে কাজ চলছিল এ ভাবেই। আচমকা বাড়ির একাংশ ভেঙে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ মামলা রুজু করেছে নিউ আলিপুর থানা। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সাবিরুল ইসলাম (৫০)। তিনি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। নিউ আলিপুরের ১০২/এফ ঠিকানায় তিনি কাজ করছিলেন। তেতলা ওই বাড়ির একাংশ ভাঙা হচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সকাল ১০টা নাগাদ ‘আশ্রয়’ নামের ওই বাড়ির এক দিকের সানশেড ভেঙে পড়তেই এক যুবকের ‘বাবা-বাবা’ চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। তাঁরা দেখেন, যুবকটির মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। সেই অবস্থায় তিনি চাঙড়ের স্তূপ সরানোর চেষ্টা করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী তাপস বিশ্বাসের কথায়, “কিছুতেই চাঙড় সরানো যাচ্ছিল না। ঠিকাদার সংস্থার লোকজনকেও পাওয়া যায়নি। শেষে আমরাই চাঙড় সরিয়ে দেখি ওই ব্যক্তির গলায় গভীর ক্ষত, মাথা সম্পূর্ণ থেঁতলে গিয়েছে।’’

স্থানীয়েরাই ঘটনাটি পুলিশে জানান। নিউ আলিপুর থানার পুলিশ পৌঁছলেও অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা যায়নি প্রথমে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর মন্তব্য, “পুলিশও দেখলাম, নিরুপায় হয়ে ফোন ঘোরাচ্ছে। এক ঘণ্টারও বেশি পড়ে ছিল ওই নির্মাণকর্মীর দেহ। শেষে পুলিশেরই অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”

নিউ আলিপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেছেন, “আমাদের অ্যাম্বুল্যান্সেই ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।’’

পুলিশের দাবি, মৃতের ছেলে জানিয়েছেন, বাড়ির যে দিকটা ভেঙে পড়ে, তার উল্টোদিকের অংশে ভাঙার কাজ চলছিল। সাবিরুল ওই দিকে বসেই ইট থেকে সিমেন্ট ছাড়াচ্ছিলেন।

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, “নির্মাণস্থলে কাজের নানা বিধি-নিষেধ কলকাতা পুরসভা আগেই জানিয়ে দিয়েছে। উঁচু জায়গায় কাজ করতে দড়ি বাঁধা, কেউ চাপা পড়লে দ্রুত তাঁকে খুঁজে পেতে রঙিন জ্যাকেটও পরার কথা। কিছুই ছিল না কেন তা ঠিকাদার সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হবে।”

বাড়িটির মালকিন সুমিতা সাহা বলেন, “এক জন বাড়ির তলায় পড়ে মারা গিয়েছেন শুনলাম। আমরা তো ঠিকাদার সংস্থাকে কাজ দিয়েছিলাম। সব নিরাপত্তা বিধি মেনে কাজ হচ্ছে কি না, সেটা তো তাদেরই দেখার কথা!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident New Alipore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE