Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ ফোয়ারার জলে লার্ভা, মোহরকুঞ্জ যেন মশার আঁতুড়ঘর

সম্প্রতি মোহরকুঞ্জে গিয়ে দেখা গেল, বন্ধ ফোয়ারার পাশে বসে গল্পগুজব করছেন কয়েক জন। তাঁদেরই এক জন, পেশায় চিকিৎসক বললেন, ‘‘এই জল কিন্তু মশার লার্ভা জন্মানোর উপযুক্ত পরিবেশ।’’

জল-যোগ: মোহরকুঞ্জের বন্ধ ফোয়ারায় জমে রয়েছে জল। নিজস্ব চিত্র

জল-যোগ: মোহরকুঞ্জের বন্ধ ফোয়ারায় জমে রয়েছে জল। নিজস্ব চিত্র

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

মাত্র ৫০ মিটারের মধ্যেই রয়েছে রবীন্দ্র সদন, এসএসকেএম হাসপাতাল। তবু ডেঙ্গির এই মরসুমে মোহরকুঞ্জ যেন আস্ত মশার আঁতুড়ঘর! সাজানো মোহরকুঞ্জে ধুমধাম করে উদ্বোধন করা ফোয়ারা প্রায় আট বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। আর সেখানেই জমে রয়েছে জল। সেই জমা জলে জমেছে আবর্জনা, জন্মেছে মশার লার্ভাও।

সম্প্রতি মোহরকুঞ্জে গিয়ে দেখা গেল, বন্ধ ফোয়ারার পাশে বসে গল্পগুজব করছেন কয়েক জন। তাঁদেরই এক জন, পেশায় চিকিৎসক বললেন, ‘‘এই জল কিন্তু মশার লার্ভা জন্মানোর উপযুক্ত পরিবেশ।’’ এখানে এসে কোনও দিন পুরসভার ডেঙ্গি অভিযান দলকে কাজ করতে দেখেছেন? ওই ব্যক্তির উত্তর, ‘‘নজরে পড়েনি।’’

কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। প্রতিদিনই সেই সংখ্যা বাড়ছে। মশাবাহিত রোগ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে সচেতনতা প্রচার চালানো হলেও এ বছর ডেঙ্গি দমন নিয়ে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পুরসভা। বর্তমানে নন্দনে চলা ২৫তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষে দেশি-বিদেশি অতিথি-অভ্যাগতদের ভিড় লেগে রয়েছে ওই এলাকায়। অথচ তারই মাত্র ৫০ মিটারের মধ্যে মোহরকুঞ্জের প্রায় আড়াই হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে থাকা জলাশয়ে কিলবিল করছে লার্ভা। তবে সেটা আদৌ মশার লার্ভা কি না, তা যাচাই করার দায়িত্ব নিয়েও পুরসভা কতটা সজাগ, উঠছে সেই প্রশ্নও।

এর আগে বিভিন্ন সচেতনতা শিবিরে কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস হামেশাই বলে এসেছিলেন যে, মাত্র চার বর্গ সেন্টিমিটার এলাকায় জল জমে থাকলেও সেই জায়গায় মশার লার্ভা জন্মাতে পারে। সেখানে আড়াই হাজার বর্গফুট এলাকায় জমে থাকা জলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।

ডেঙ্গি বিশেষজ্ঞেরা আরও জানাচ্ছেন, ডেঙ্গিবাহী এডিস ইজিপ্টাই মশা ১০০ মিটার পরিধি জুড়ে ঘুরে বেড়ায়। অর্থাৎ, মোহরকুঞ্জে জন্মানো মশা অতি সহজে নন্দন তো বটেই, পৌঁছে যেতে পারে এসএসকেএম হাসপাতালের অন্দরেও।

এটা জেনেও পুর প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? সচেতনতা শিবিরে বারবার মশা জন্মাতে না দেওয়ার বার্তা দেওয়া হলেও পুরসভার নিজস্ব পার্কেই কেন জল জমে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হচ্ছে? মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘ওই ফোয়ারায় জল মাঝে মাঝে পরিষ্কার হয়।

সম্প্রতি আবার বৃষ্টির কারণে জল জমেছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, ফোয়ারায় জমা জলের ব্যাপারটি নজরে আসার পরে অবিলম্বে পাম্প চালিয়ে সেই জল বার করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই সমস্যার স্থানীয় সমাধান করতে ওই ফোয়ারা ফের চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Mosquito Fountain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE