Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাঝগঙ্গায় লঞ্চে আগুন, আতঙ্ক

প্রায় পঁচিশ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি তখন মাঝ গঙ্গায়। আচমকাই বন্ধ হয়ে গেল ইঞ্জিন। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় ফের তা চালু হলেও ইঞ্জিনের জায়গায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ক্রমশ সেই আগুনের শিখা বাড়তে থাকে। ভয়ে আর্তনাদ শুরু করে দেন ওই লঞ্চের যাত্রীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৪
Share: Save:

প্রায় পঁচিশ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি তখন মাঝ গঙ্গায়। আচমকাই বন্ধ হয়ে গেল ইঞ্জিন। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় ফের তা চালু হলেও ইঞ্জিনের জায়গায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ক্রমশ সেই আগুনের শিখা বাড়তে থাকে। ভয়ে আর্তনাদ শুরু করে দেন ওই লঞ্চের যাত্রীরা। শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই কান্নাকাটি জুড়ে দেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার মুখে প্রায় মাঝ গঙ্গায় ভেসে থাকা লঞ্চ থেকে আর্তনাদ শুনে ও আগুনের শিখা বেরোতে দেখে বালির ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয় এক যুবক মোটরবাইক নিয়ে পড়িমড়ি করে ছোটেন বেলুড় ফেরি ঘাটে। যাওয়ার পথেই তিনি ফোন করে স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানান। এর পরে সকলে মিলে মোটরচালিত নৌকো নিয়ে ওই লঞ্চের সামনে গিয়ে সব যাত্রীকেই উদ্ধার করেন। পরে তাঁদের ভুটভুটি নৌকো করেই দক্ষিণেশ্বরে ফেরত পাঠানো হয়।

কী ঘটেছিল?

এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বেলুড় কাঠগোলা ঘাট থেকে ভূতল পরিবহণের একটি লঞ্চ জনা পঁচিশ যাত্রীকে নিয়ে দক্ষিণেশ্বরের দিকে রওনা দেয়। লঞ্চের যাত্রীরা জানান, ঘাট থেকে ছাড়ার পরে দু’বার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। লঞ্চ চালু করেন কর্মীরা। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ বালি দেওয়ানগাজি ঘাটের কাছে পৌঁছতেই ফের বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চ। ফের তা চালু করলেও ঘটে বিপত্তি।

যাত্রীরা জানান, লঞ্চের ইঞ্জিন থেকে দিয়ে কালো ধোঁয়া ও দাউদাউ করে আগুন জ্বলে। ক্রমশ সেই আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। কর্মীরা গঙ্গা থেকে জল তুলে সেখানে ঢালতে থাকেন। কিন্তু আগুন তখন নেভেনি। বেশ কিছুক্ষণ ধরে জল ঢালার পরে আগুনের তীব্রতা কিছুটা কমে।

লঞ্চের এক যাত্রী বলেন, ‘‘লঞ্চে কোনও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না। তা দেখেই আরও ভয় বেড়ে গিয়েছিল। অনেকে বলছিলেন ঝাঁপ দেবেন।’’ উত্তমবাবু আরও জানান, লঞ্চে থাকা কয়েকজন যুবক যাত্রী সকলকে চেঁচামেচি না করতে বলছিলেন। বারবার করে লঞ্চের কর্মীদের বলা হচ্ছিল বেলুড় কিংবা দক্ষিণেশ্বরের টিকিট কাউন্টারে খবর দিতে। কিন্তু মাঝ গঙ্গায় মোবাইলের টাওয়ারও তেমন কাজ করছিল না বলেই দাবি যাত্রীদের। এর মধ্যেই লঞ্চ কর্মীরাও ফোনে যোগাযোগ করে খবর পাঠাতে শুরু করেন।

লঞ্চের যাত্রীরা চিৎকার করে ঘাটে থাকা মানুষদের জানানোর চেষ্টা করছিলেন। সেই সময়ই বালি রবীন্দ্রভবন ঘাটে দাঁড়িয়ে ছিলেন জগন্নাথ সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ চেঁচামেচির শব্দ কানে আসে। দূরে দেখি লঞ্চ থেকে আগুন বেরচ্ছে। তখনই বাইক নিয়ে বেলুড়ের ঘাটে দৌড়ই।’’ বেলুড় কাঠগোলা ঘাটের কাছেই ছিলেন কাউন্সিলর পল্টু বণিক ও প্রবীর রায়চৌধুরী। জগন্নাথবাবুর থেকে ফোনে খবর পেয়ে তাঁরাও ঘাটের দিকে রওনা দেন।

বেলুড়ের ওই ফেরী ঘাটের কর্মী স্বপন গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ভুটভুটি নৌকো নিয়ে ওই লঞ্চের পাশে গিয়ে আটকানো হয়। তার পরে একেএকে সকলকে নামিয়ে ভুটভুটিতে চাপিয়ে বেলুড়ে ফিরিয়ে আনা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panic Ganges Launch Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE