সচেতনতায়: ডেঙ্গি নিয়ে প্রচারে পুরকর্মীরা। বৃহস্পতিবার, উল্টোডাঙার মুরারিপুকুরে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির ভিতর থেকে যাঁরা রাস্তায় ময়লা ফেলেন, তাঁরা সমাজের শত্রু। —বুধবার চেতলায় পুরসভার এক অনুষ্ঠানে মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ কথা বলেছিলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর, পুর অফিসারদের এ সবের প্রতিবাদ করতে নির্দেশ দেন তিনি। ঠিক এর পরদিন, বৃহস্পতিবার উল্টোডাঙার কাছে মুরারিপুকুর রোডেও একই অভিযোগ শুনতে হল কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীকে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সোম পাল, ইলা চক্রবর্তীরা বলেন, ‘‘কিছু মানুষ দিনের পর দিন রাস্তায় ময়লার প্যাকেট ফেলে চলেছেন। পুরকর্মীদের তা জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।’’ গত বছর কলকাতা শহরের যে সব ওয়ার্ড এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল, এ বার সেই সব ওয়ার্ডের ৪২টি রাস্তা ধরে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতার অভিযান শুরু করেছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। এ বারই প্রথম ওই অভিযানে যোগ দিচ্ছেন জঞ্জাল অপসারণ, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিল্ডিং দফতরের অফিসার এবং কর্মীরা।
গত বছর এই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সব থেকে বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এমনকি একাধিক মৃত্যুও হয়েছিল। বাসিন্দা স্নেহা চক্রবর্তী, দীপালি দত্ত, পায়েল পাল-সহ অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখনও ওঁদের চোখমুখ থেকে সেই আতঙ্ক কাটেনি। জানালেন, কেউ রাস্তায় জঞ্জাল ফেললে ওঁদের রাগ হয়, অথচ প্রতিবাদ জানানোর সাহস নেই। ওঁরা বলছেন, ‘‘কেউ কথা শোনেন না। তাই ডেপুটি মেয়রকে অভিযোগ জানালাম।’’
সব শুনে কাউন্সিলরকে পাশে নিয়ে ডেপুটি মেয়র বললেন, ‘‘রাস্তায় আবর্জনার প্যাকেট ফেললে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এ বার নোটিস পাঠানো হবে। তাতেও কাজ না হলে জরিমানা করা হবে।’’ যদিও সেখানে হাজির থাকা পুরসভারই একাধিক অফিসার অতীনবাবুর আড়ালে বলাবলি করছিলেন, কিন্তু আইন কড়া না হলে কী করা যাবে?’’
সব শেষে মুরারিপুকুরের ৩৫ ডি ঠিকানায় গিয়ে দেখা গেল, ফাঁকা জায়গায় পড়ে রয়েছে জঞ্জাল।
বিরক্ত অতীনবাবু বলেন, ‘‘এখানে তো মশার আখড়া হয়ে রয়েছে।’’ জঞ্জাল অপসারণ দফতরের অফিসারকে ডেকে দ্রুত সে সব পরিষ্কারের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি এ-ও বলেন, ‘‘যা খরচ হবে, তা বহন করতে হবে ওই জায়গার মালিককে।’’ মালিকপক্ষকে পুর আইনের ৪৯৬ এ ধারায় নোটিস ধরানোর নির্দেশও দেন তিনি। স্থানীয়েরা সেখানেও কাউন্সিলরকে অভিযোগ করেন, পুরকর্মীরাও ওই জায়গায় ময়লা ফেলে দিয়ে যান।
প্রায় ঘণ্টা চারেকের অভিযান শেষ হওয়ার পরে অতীনবাবু জানান, এখানে নিয়মিত নজর রাখতে বলা হয়েছে পুরকর্মীদের।
কোনও অভিযোগ পেলে তাঁদেরকেও দায় নিতে হবে। ফের ওই এলাকায় পুরসভার র্যাপিড অ্যাকশন দল যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy