Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দেখভাল আদৌ হত কি, প্রশ্ন তদন্তে

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘বিভিন্ন রকম নথি চাওয়ার পাশাপাশি সেতুর নকশা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণ সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নও করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় নথি এবং উত্তর পাঠাতে বলা হয়েছে।’’ 

ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতু।

ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৩০
Share: Save:

মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার তদন্তে নেমে পূর্ত দফতরের ভূমিকাই মূলত খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সেতুটি বহু বছরের পুরনো। তাই সেটির মালমশলার মান ঠিক ছিল কি না বা নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও ত্রুটি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখে লাভ নেই। এই মুহূর্তে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবটাই মূলত সামনে আসছে। পূর্ত দফতরই সেই দায়িত্বে ছিল। তাদের কাছে চাওয়া হয়েছে সেতুর নকশাও।

তবে ছাড় পাচ্ছেন না মেট্রো কর্তৃপক্ষও। জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণের জন্য মাঝেরহাট সেতুর কোনও ক্ষতি হয়েছিল কি না, দেখা হবে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। লালবাজারের খবর, ওই সেতুর ব্যাপারে দু’দিন আগেই পূর্ত দফতর ও মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘বিভিন্ন রকম নথি চাওয়ার পাশাপাশি সেতুর নকশা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণ সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নও করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় নথি এবং উত্তর পাঠাতে বলা হয়েছে।’’

ইতিমধ্যেই ভাঙা সেতু থেকে অন্তত দশ রকমের নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক বিভাগ। সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। ফরেন্সিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রিপোর্ট পেতে সময় লাগবে।’’ তাঁর মতে, নানা সূত্র থেকে নানা কারণ বলা হচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষা না করে এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়। রিপোর্ট পেলে তা তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে ২৫ জন জখম হন। মারা যান তিন জন। নবান্নের খবর, ওই সেতু পূর্ত দফতরের অধীনে ছিল। যদিও ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইঙ্গিত ছিল, মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণের জন্য সেতুর ক্ষতি হয়েছে। মেট্রোর নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে রাজ্য সরকার।

লালবাজারের খবর, পূর্ত দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, শেষ কবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছিল মাঝেরহাট সেতুর। শেষ কবে ‘ফিট সার্টিফিকেট’ মিলেছিল। এই সংক্রান্ত সব নথিও জমা দিতে বলা হয়েছে। কী কী পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ হত, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। ওই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে কারা ভারপ্রাপ্ত ছিলেন, তা-ও জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা। একই ভাবে মেট্রোর কাছে জোকা-বি বা দী বাগ প্রকল্পের নকশা চাওয়া হয়েছে। মেট্রোর স্তম্ভে কী ধরনের ‘পাইলিং ক্যাপ’ ব্যবহার করা হয়েছে, তা-ও জানতে চেয়েছে পুলিশ।

এ দিনই শেষ হয়েছে সেতুর ধসে পড়া অংশ ভাঙার কাজ। চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোও। তবে ভেঙে পড়া সেতুর একাংশে গ্যাসের পাইপ রয়েছে। সেটি রাত পর্যন্ত সরানো যায়নি। আজ, বুধবার সেটি সরানো হলে ধ্বংসস্তূপ সরানো শেষ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE