বুধবার ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। ছবি: রয়টার্স।
বেঁচে আছে তো ওঁরা? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে মাঝেরহাট ব্রিজের দুর্ঘটনাস্থল ঘিরে। ব্রিজের উপরে থাকা মানুষজনকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সেতুর নীচের কী অবস্থা? সেখানেই তো ছিল মেট্রোরেলের শ্রমিকদের অস্থায়ী একটা ঘর! সেই ঘরে কি কেউ ছিলেন? থাকলেও তাঁরা কি বেঁচে আছেন? ঘটনার পর প্রায় ২০ ঘণ্টা কেটে গেলেও এ বিষয়ে ধোঁয়াশা কিন্তু কাটেনি।
ধ্বংসস্তূপের কাছাকাছি যেতেই এক জায়গায় ছোট মতো একটা জটলা চোখে পড়ল। আলোচনাটা যে এই ঘটনাকে নিয়েই তা যথেষ্ট ঠাওর করা যাচ্ছিল। কিন্তু কাছে যেতেই স্পষ্ট হল উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগ। কয়েক জোড়া চোখ ধ্বংসস্তূপের দিকে তাকিয়ে কী যেন খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে! না, স্থানীয় বাসিন্দা নন এঁরা। মুর্শিদাবাদ থেকে ছুটে এসেছেন এখানে। একবারে ঘটনাস্থলে। জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, ভয়ানক এই ঘটনায় যে দু’জন নিখোঁজ রয়েছেন, তাঁরা সেই দু’জনের আত্মীয়।
মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার খবর পেয়েই ছুটে এসেছেন দুই পরিবারের লোকেরা। সেতুর নীচে কি চাপা পড়লেন তাঁদের প্রিয়জন? প্রতি মুহূর্তে একটা দমবন্ধ করা উদ্বেগ।প্রণব দে ও গৌতম মণ্ডল। দু’জনেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। ব্রিজের পাশে যে মেট্রোরেলের কাজ হচ্ছে, সেখানেই কাজ করছিলেন তাঁরা। কর্মীদের থাকার জন্য ব্রিজের নীচেই একটা অস্থায়ী ঘর ছিল কর্মীদের। কাজ শেষে সেখানেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। ব্রিজ যখন ভেঙে পড়ে সে সময় তাঁরা ওই ঘরেই ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ওই দু’জন। মেট্রোরেলও দাবি, করেছে তাঁদের দুই কর্মী নিখোঁজ। এর পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি প্রণব ও গৌতম ওই ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন?
নিখোঁজ শ্রমিক প্রণব দে-র আত্মীয় ছুটে এসেছেন মুর্শিদাবাদ থেকে। নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: ‘আমি ভাঙা সেতুর নীচে আটকে, বাঁচান ভাইজান’
আরও পড়ুন: ঢুকছে না জেসিবি, হাতে হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে প্রাণের খোঁজ
যেখানে ঘরটা ছিল সেই জায়গাতেও দুর্ঘটনার পর পরই সেখানেও খোঁজ চালানো হয়। বিশাল চাঙড়ের নীচে চাপা কেউ আটকে আছেন কি না, সেটা বুঝতে পারছিলেন না উদ্ধারকারীরা। পরে ড্রিল মেশিন দিয়ে সেই চাঙড় ফুটো করে ক্যামেরা ভিতরে ঢুকিয়েও খোঁজা হয়। আনা হয় স্নিফার ডগও। কিন্তু না, কারও হদিশ মেলেনি। তবে হাল ছেড়ে দেননি উদ্ধারকারীরা। ওই জায়গার চাঙড় সরানোর কাজ করছেন তাঁরা। পুলিশও মনে করছে ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন ওই দু’জন। কিন্তু যতক্ষণ না পুরো উদ্ধারকাজ শেষ হচ্ছে, স্পষ্ট কিছু জানাতে চাইছে না পুলিশ।
আর আশায় বুক বাঁধছেন প্রণব ও গৌতমের পরিবার।
(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy