জয়ন্তী ভৌমিক
সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে বৃদ্ধা মাকে মারধরের অভিযোগ উঠল ছোট ছেলে, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন সোদপুরের বাসিন্দা ৭৩ বছরের ওই বৃদ্ধা। তাঁর নাম জয়ন্তী ভৌমিক।
গত সোমবার খড়দহ থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগে জয়ন্তীদেবী জানিয়েছেন, তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে শুভঙ্কর ভৌমিক অন্যত্র থাকেন। মেয়ে মৌসুমী কুন্ডুরও কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। জয়ন্তীদেবীর স্বামী কুমারকান্তি ভৌমিক সেনাবাহিনীর কর্মী ছিলেন। ২০০০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর পেনশনেই দিন চলছে ওই বৃদ্ধার। তাঁর অভিযোগ, ছোট ছেলে সুমিতের নিজস্ব পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও মায়ের সম্পত্তি দখলের জন্য অত্যাচার করছেন। সেই ছেলে আবার মায়ের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।
জয়ন্তীদেবী জানান, সোদপুরের দেশবন্ধুনগরে উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতরের জমিতে তাঁর একটি বাড়ি রয়েছে। পাশেই দফতরের অন্য একটি জমিতে বাড়ি করেছেন সুমিত। তা সত্ত্বেও তিনি পরিবার নিয়ে জয়ন্তীদেবীর বাড়িতেই থাকেন। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘বাড়িটা ওর নামে করে দেওয়ার জন্য সব সময়ে চাপ দেয়। রাজি না হওয়ায় ছেলে, বৌমা ও বড় নাতনি মিলে মারধর করে।’’ জয়ন্তীদেবীর আরও অভিযোগ, তাঁকে জল ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এমনকি, রাতে ঘুমোলে নাতনিরা এসে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করে। কয়েক দিন আগে ছোট বৌমা ইন্দ্রাণীও তাঁকে মারধর করেছেন বলে বৃদ্ধার অভিযোগ।
সিরোসিস অব লিভারে ভুগছেন জয়ন্তীদেবী। মাঝেমধ্যেই তিনি চিকিৎসার জন্য বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। বাড়িতেও তাঁর অক্সিজেন চলে। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘মেয়ে ছাড়া কেউ খোঁজও নেয় না, বেঁচে আছি কি না।’’ তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুমিত ও ইন্দ্রাণী। বৃহস্পতিবার সুমিত বলেন, ‘‘কেন আমরা অত্যাচার করব? বাবার সব সম্পত্তি হাতানোর জন্য বোন মৌসুমীর প্ররোচনাতেই মা রোজ আমার স্ত্রী ও মেয়েদের গালিগালাজ করেন। দাদাকেও বাড়ি থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছেন মা।’’ মৌসুমীর দাবি, ‘‘দাদাদের কেউই মায়ের খোঁজ নেয় না। আমিই সব চিকিৎসা করাচ্ছি। আর সম্পত্তি মা কাকে দেবেন, সেটা তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত। আমি কেন প্ররোচনা দেব? আমার দাদাই সম্পত্তির জন্য অত্যাচার করছেন।’’ অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে খড়দহ থানার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy