Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

নেই অ্যাম্বুল্যান্স, সুস্থ হয়েও কোভিড ওয়ার্ডে ২৮ ঘণ্টা

শেষে এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতর অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করলে কোভিডমুক্ত তিন জন স্বস্তি পান।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:২৬
Share: Save:

ছুটির পরেও বাড়ি ফিরতে পারলেন না। অ্যাম্বুল্যান্স না থাকায় আরও ২৮ ঘণ্টা কোভিড ওয়ার্ডেই থাকতে হল তিন সুস্থ ব্যক্তিকে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও হাওড়া পুরসভার টালবাহানায় এমনই হয়রানির শিকার হলেন হাওড়ার টি এল জয়সওয়াল হাসপাতালে ভর্তি থাকা ওই তিন জন। শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল ওই হাসপাতালে। শেষে এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতর অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করলে কোভিডমুক্ত তিন জন স্বস্তি পান।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়সওয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রতন চট্টোপাধ্যায়, প্রশান্ত দেব এবং নবকুমার বোধককে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ ছুটি দিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি ভাবে অ্যাম্বুল্যান্স এলে তবেই তাঁরা বাড়ি যেতে পারবেন। নিজেরা কোনও ব্যবস্থা করে যেতে পারবেন না।

ওই রোগীদের অভিযোগ, ছুটির পরে তাঁরা প্রস্তুত হয়ে বৃহস্পতিবার সারাদিন বসে ছিলেন, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুল্যান্সের কোনও ব্যবস্থা করেননি। এমনকি, শুক্রবার বেলা পর্যন্ত তাঁরা বার বার পুরসভা, সরকারি কোভিড হেল্পলাইন এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরে ফোন করেও কোনও সাহায্য পাননি। শেষে তাঁরা তিন জনই মোবাইলে নিজেদের দুরবস্থার কথা ভিডিয়ো করে সংবাদমাধ্যমে পাঠানোর পরে নড়েচড়ে বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রশান্ত দেব তাঁর বার্তায় বলেন, ‘‘আমি ৭ অগস্ট করোনা পজ়িটিভ হই। গত কাল (বৃহস্পতিবার) ডাক্তারবাবু বলেন, ‘আপনাকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হল’। পরে সিস্টারও সেই কথা জানান। বার বার পুরসভায় ফোন করলে জানানো হয়, তারা দিনে এক বারের বেশি গাড়ি পাঠায় না। বাকিটা হাসপাতাল দেখবে। স্বাস্থ্য দফতরে ফোন করলে জানানো হয়, পুরসভা গাড়ি পাঠাবে। এই টালবাহানায় আমাদের ছুটি হয়ে গেলেও বাড়ি যেতে পারিনি।’’ হাওড়ার ইছাপুরের বাসিন্দা নবকুমার বোধক বলেন, ‘‘ফোন করে লালবাজারে জানিয়েছি। পুরসভাকে জানিয়েছি। হেল্পলাইনেও ফোন করেছি। কাল থেকে বসে আছি, কোনও ব্যবস্থা নেই।’’ রতন চট্টোপাধ্যায় নামে অন্য জন বলেন, ‘‘ছুটি হয়ে গেলেও গাড়ি না পাওয়ার কারণে জয়সওয়াল হাসপাতাল থেকে বেরোতে পারছি না। ’’

আরও পড়ুন: দূরত্ব-বিধির বালাই নেই সাধনের অনুষ্ঠানে

বিষয়টি নিয়ে হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে আমাদের কাছে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চাওয়া হয়নি। তা ছাড়া, বাড়ি থেকে রোগী নিয়ে আসা আমাদের কাজ। হাসপাতাল থেকে কাউকে বাড়ি পাঠানোর কাজ জেলা স্বাস্থ্য দফতর বা হাসপাতালের।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘নতুন সরকারি নির্দেশ এসেছে শুক্রবারই। বলা হয়েছে, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা রোগীকেই করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে আমরাই অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেছি। কেন দেরি হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Ambulance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE