Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শহরবাসীর দুর্ভোগ দূর হোক

পুরসভা সূত্রের খবর, এ বার দুর্গাপুজোর বৈঠকে মতিলাল গুপ্ত রোডের ওই অংশটির হাল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল, নিকাশির হাল না ফেরালে ওই রাস্তা টেকানো মুশকিল।

এ ভাবেই যাতায়াত প্রমোদনগরের বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই যাতায়াত প্রমোদনগরের বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০৫
Share: Save:

বৃষ্টি হয়নি গত কয়েক দিন। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোতে হচ্ছে নতুন জুতো হাতে নিয়ে কিংবা হাঁটুর উপরে প্যান্ট তুলে। কারণ নিকাশি নালা দিয়ে জল বেরোচ্ছে না। কোথাও কোথাও জমে থাকা কালো জল থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে।

পুজোয় গোটা শহর যখন সাজছে, তখন এমনই হাল বেহালার ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন প্রমোদনগরের। দীর্ঘ দিন জল না সরায় রাস্তা ফেটে চৌচির। এলাকায় গেলে মনে হবে তা কলকাতার বাইরে।

পুরসভা সূত্রের খবর, এ বার দুর্গাপুজোর বৈঠকে মতিলাল গুপ্ত রোডের ওই অংশটির হাল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল, নিকাশির হাল না ফেরালে ওই রাস্তা টেকানো মুশকিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুর কর্তৃপক্ষের কানে বিষয়টি ঢোকেনি। তাই পুজোর সময়ে আবাসনের বাসিন্দাদের ময়লা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। একটি আবাসনে দেখা গেল, পাম্প চালিয়ে ভিতরের জমা জল বের করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু জল অনেক ক্ষেত্রেই ফের ঢুকে পড়ছে আবাসনের ভিতরে।

কেন যে এই অবস্থা পুরসভার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না বাসিন্দারা। এলাকার বিধায়ক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিকাশির ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বেহালার কাউন্সিলর। তবু কেন তাঁদের এ ভাবে ভুগতে হবে সেই প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা।

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সোমা চক্রবর্তী সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, সব ফাঁকা জমিতে বাড়ি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা তেমন ভাবে গড়ে ওঠেনি। মানুষ জমা জল পাম্প করে ফেলার চেষ্টা করছেন বটে, কিন্তু তা বেরোবার জায়গা নেই। কত দিন আর মানুষকে এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে? সোমাদেবী বলেন, পুজোর পরে কেইআইআইপি-র কাজ শুরু হবে। এলাকার জমা জল নিকাশি ব্যবস্থার সাহায্যে চড়িয়াল খালে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।

১১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ অবশ্য এই সমস্যা সম্পর্কে তেমন অবগত নন। রবিবার তিনি বলেন, ওই এলাকায় কেইআইআইপি-র কাজের জন্য কিছু সমস্যা হচ্ছে। তাতেই জল জমে থাকছে কি না, তা দেখছি। খোঁজ নিচ্ছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

পুজোয় বাকি শহর সাজলেও ভাল নেই লেক গার্ডেন্সের পরিবহণ দফতরের বাস ডিপোর পিছনের রাস্তার বাসিন্দারা। রাস্তার পাশে ডাঁই হয়ে আছে জঞ্জাল। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যেতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। মাছি উড়ছে ভনভন করে। জল গড়িয়ে আসছে জঞ্জালের স্তূপ থেকে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া প্রভাবিত ওই এলাকার মানুষ তাই শঙ্কিত। মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দেবব্রত মজুমদারের মন্তব্য, এমনটা হওয়ার কথা নয়। জঞ্জাল জমে থাকলে তা সরিয়ে নেওয়া হবে।

শুধু পুরসভাকে দুষলে হবে না। নিজেদের বিপদ অনেক ক্ষেত্রে ডেকে আনছেন এলাকার বাসিন্দারাও। ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দুয়া মোড়ে জঞ্জালের ভ্যাট নীল-সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছে পুরসভা। মানুষ কিন্তু সেই কাপড়ের উপর দিয়েই ছুঁড়ে দিচ্ছেন জঞ্জাল ভর্তি প্লাস্টিকের ব্যাগ। তার বেশির ভাগই গিয়ে পড়ছে পাশের নিকাশি খালে। ভ্যাট আড়াল করেই দায় সেরেছে পুরসভা। কোনও নজরদারির ব্যবস্থা করেনি।

পুজোর আগে শহরের বিভিন্ন রাস্তা মেরামত হয়েছে। রং হয়েছে রাস্তার পাশের কাফ চ্যানেলেও। কিন্তু এর মধ্যেই বিবর্ণ চেহারা মা উড়ালপুলের। এখানে-সেখানে পিচ উঠে গিয়েছে। হোঁচট খাচ্ছে গাড়ি। উড়ালপুলের গায়ে রং চড়েনি। কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনূর্ধ্ব সতেরো বিশ্বকাপের আগেই মা উড়ালপুলের ভোল বদলে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Waterlogged Drainage Damage Drainage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE