ভেসে গিয়েছে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স চত্বর। বুধবার। ছবি:রণজিৎ নন্দী।
কোথাও হাঁটুজল। কোথাও বা কোমর পর্যন্ত। বুধবার একাদশীর দুপুর থেকে একটানা প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা শহরের বিক্ষিপ্ত ছবি ছিল এমনই।
সেই জমা জলের জেরে নাকাল হতে হয় পথচারী থেকে পুজো উদ্যোক্তা সকলকেই। উত্তরের কলেজ স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গাঁধী রোড, ধর্মতলা, স্ট্র্যান্ড রোড-সহ বিস্তীর্ণ অংশে জল জমে যায়। দক্ষিণ কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের একাংশ, আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স, চারুচন্দ্র প্লেস (ইস্ট), ভবানীপুরের জাস্টিস চন্দ্রমাধব রোড সংলগ্ন কিছু এলাকা এবং দক্ষিণ শহরতলির মোমিনপুর ও জোকা অঞ্চলেও এ দিন জল জমে যায়।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন দক্ষিণের তুলনায় উত্তরে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল বেশি। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ জানান, ‘‘ওই দু’ঘণ্টা একটানা বৃষ্টির মধ্যে উত্তরে আধ ঘণ্টায় যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে জল জমে যাওয়া স্বাভাবিক। এ ছাড়াও উত্তরের ওই সব এলাকায় পুরনো নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা তো রয়েছেই। সেটি আমরা চিহ্নিত করেছি। সংস্কার শুরু হবে।’’
নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক জানান, বেলা ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত শহরে যেখানে বৃষ্টি হয়েছে গড়ে ৫৩ মিলিমিটার, সেখানে আধ ঘণ্টায় উত্তরের ওই সব অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪০ মিলিমিটার। উত্তর কলকাতার মানিকতলা সংলগ্ন সব জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যায়। অন্য দিকে, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং তার আশপাশের নিচু এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। কলকাতা পুরসভা থেকে পাওয়া বৃষ্টির পরিমাপ থেকে জানা গিয়েছে, নিউ মার্কেট, জোকা, মোমিনপুর ও আলিপুরে বৃষ্টি হয়েছে যথাক্রমে ঘণ্টায় ৫৩, ৪৪, ৪২ এবং ৪০ মিলিমিটার। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সব ক’টি জায়গায় পাম্প চালিয়ে দ্রুত জল নামানো হয়েছে।
জল জমে যাওয়ার ফলে সমস্যায় পড়েছেন শহরের অনেক পুজো উদ্যোক্তাই। কবিরাজবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি অমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উল্টোডাঙা অঞ্চলে জল তেমন না জমলেও বৃষ্টির মধ্যে বিসর্জনের জন্য প্রতিমা মণ্ডপ থেকে বার করতে খুব সমস্যা হয়েছে।’’ প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরের বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্যোক্তারাও।
অন্য দিকে, জল জমার কারণে গাড়ি গতি শ্লথ হয়ে এ দিন উত্তর এবং মধ্য কলকাতার বিভিন্ন অংশে যানজট হয়। পথচারীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, পুজোর বিজ্ঞাপনের জন্য চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের ধারে রাখা বাঁশ জলে ভেসে গিয়ে রাস্তার মাঝে এসে পড়ায় গাড়ি যেতে পারছিল না।
অনেক সময়েই পুলিশকে দেখা গিয়েছে রাস্তায় নেমে সে সব সরাতে। যদিও পুলিশের দাবি, অন্য দিনের তুলনায় এ দিন যানবাহন চলাচল কম থাকায় জমা জল যানজটে খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy