Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্টোরের ‘ডিউটি’ সে দিন সামলাচ্ছিলেন ‘বদলিরা’

সুপারের দাবি, ‘‘হাসপাতাল কর্মীরা কখন ধোঁয়া দেখলেন, কখন আমাদের জানালেন সেই সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তারের নমুনা সংগ্রহ করছেন ফরেন্সিক দলের এক সদস্য। বৃহস্পতিবার। ছবি: নীলোৎপল বিশ্বাস

তারের নমুনা সংগ্রহ করছেন ফরেন্সিক দলের এক সদস্য। বৃহস্পতিবার। ছবি: নীলোৎপল বিশ্বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

বুধবার অর্থাৎ মেডিক্যাল কলেজে অগ্নিকাণ্ডের সকালে স্টোরের দায়িত্বে যাঁদের থাকার কথা ছিল, তাঁরা সেখানে ছিলেনই না বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৈরি সাত সদস্যের তদন্তকমিটি। ওই কর্মীরা নিজেদের মধ্যে ‘ডিউটি’ বদলে ছিলেন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘আগুন লাগার দিনই শুধু নয়, এখন তো দেখছি, বিভিন্ন সময়ে এ ভাবে রোস্টার বদলানো হয়। এ হতে পারে না। যাঁদের থাকার কথা, তাঁরা ছিলেন না কেন, না থাকলে কোথায় ছিলেন দেখা হচ্ছে।’’ সকাল সাড়ে ৬টায় রোগীর পরিজনেরা ধোঁয়া দেখতে পেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দমকলে জানাতে দেরি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সুপারের দাবি, ‘‘হাসপাতাল কর্মীরা কখন ধোঁয়া দেখলেন, কখন আমাদের জানালেন সেই সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তবে ঘটনার সময় যে দু’জন কর্মী স্টোরে ছিলেন, বৌবাজার থানার তরফে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কর্মীরা জানিয়েছেন যে, স্টোরে রেফ্রিজারেটরের পিছনে যে দেওয়ালে তারের সারি এবং সুইচ বোর্ড রয়েছে, তা দিয়ে মাঝে মধ্যেই জল পড়ে। ওই কর্মীরা দাবি করেছেন, ধোঁয়া দেখে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। কেন তাঁরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেন না? পুলিশের বক্তব্য, ওই কর্মীরা জানান, ধোঁয়ার পরিমাণ এত বেশি ছিল যে তাঁরা ওই জায়গায় পৌছতে পারেননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, খুব শীঘ্রই ওই দেওয়াল সংস্কার করার কথা ছিল। এ ব্যাপারে টেন্ডারও পাশ হয়ে গিয়েছিল।

এ দিকে, বাগড়ি মার্কেটের মতো মেডিক্যালে আগুন নিয়েও দমকল কেন দ্রুত অভিযোগ দায়ের করল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার প্রায় ৬২ ঘণ্টা পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিল দমকল। তাদের যুক্তি ছিল, আগুন না নেভানো পর্যন্ত অভিযোগ জানানো যায় না। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজে আগুন নেভার একদিন পরেও কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি পুলিশকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দমকলের অধিকর্তা সমীর চৌধুরী বলেন, ‘‘সবে তো আগুন নিভল। এ বার আমরা অভিযোগ দায়ের করব পুলিশের কাছে।’’ আবার রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেও অভিযোগ দায়ের হয়নি। সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা তো তদন্ত করছি। তার পরে প্রয়োজন হলে অভিযোগ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE