Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রুট ভেঙে যাত্রা শুরুর পথে দুই মেট্রো

অনন্তকাল ধরে চলছে শুধুই খোঁড়াখুঁড়ি। সে ডায়মন্ড হারবার রোডই হোক বা ই এম বাইপাস—সর্বত্র শুধু নতুন মেট্রোর কাজের নামে হয়রানি। তবে কি এই যানজট আর মেট্রোর কাজ থেকে রেহাই নেই? আদৌ কি কখনও চালু হবে নয়া মেট্রো?

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ০২:৩৩
Share: Save:

অনন্তকাল ধরে চলছে শুধুই খোঁড়াখুঁড়ি। সে ডায়মন্ড হারবার রোডই হোক বা ই এম বাইপাস—সর্বত্র শুধু নতুন মেট্রোর কাজের নামে হয়রানি। তবে কি এই যানজট আর মেট্রোর কাজ থেকে রেহাই নেই? আদৌ কি কখনও চালু হবে নয়া মেট্রো?

এই আশঙ্কা কলকাতাবাসীর মন থেকে মুছে দিতে চান মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। তাই এ বার গোটা প্রকল্পটি একসঙ্গে চালু করার পরিকল্পনা ছেড়ে দিয়ে ভাগে ভাগে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে উদ্যোগী তাঁরা। এর পরেও যেমন যতটা কাজ শেষ হবে, ততটা অংশের পরিষেবা চালু করে দেবে মেট্রো রেল। তা হলে প্রকল্পের কাজ যে চলছে এবং অচিরেই তা শেষ হতে পারে, তা বুঝতে পারবেন শহরবাসীরা। এ জন্যই দফায় দফায় নতুন মেট্রো চালুর কথা ভাবছেন রেলের কর্তারা।

গত শনিবারই কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রথম ধাপে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু করে দেওয়া হবে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত। তার পরে ধাপে ধাপে ওই প্রকল্প বি বা দী বাগ হয়ে যাবে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত।

একই ভাবে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষও ভাবছেন ভাগে-ভাগে চালু করবেন তাঁদের প্রকল্প। মেট্রো রেল সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে জোকা-বি বা দী বাগ প্রকল্পটি প্রাথমিক ভাবে জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত চালু করে দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে ধাপে-ধাপে তা নিয়ে যাওয়া হবে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। অন্য দিকে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ চাইছেন, নিউ গড়িয়াথেকে বিমানবন্দর প্রকল্পও প্রাথমিক ভাবে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত চালু করে দিতে। পরবর্তী ধাপে তা টেনে নিয়ে যাওয়া হবে বিমানবন্দর পর্যন্ত।

কিন্তু আদৌ কি এ ভাবে দফায় দফায় সব প্রকল্প শুরু করা সম্ভব? এ প্রসঙ্গে মেট্রো রেল কর্তারা উদাহরণ দিচ্ছেন দমদম থেকে নিউ গড়িয়া প্রকল্পের। এক মেট্রো কর্তা বলেন, ‘‘নিউ গড়িয়া-দমদম প্রকল্প প্রথমে চালু হয়েছিল ভবানীপুর থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে এক দিকে টালিগঞ্জ ও অন্য দিকে দমদম পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। এরও কয়েক বছর পরে শুরু হয় টালিগঞ্জ থেকে কবি নজরুল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল। তার কিছু দিন পরে চালু হয় কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা।

ওই কর্তা জানান, জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত জমি জট-সহ যে সব বাধা-বিপত্তি ছিল, তা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘জোকা ডিপো এবং তারাতলার টাঁকশাল পর্যন্ত ছোটখাটো দু’-একটি জায়গায় জমি সংক্রান্ত কিছু জট রয়েছে। কিন্তু তা কয়েক মাসের মধ্যেই কেটে যাবে বলে আশাবাদী আমরা। সে কারণে সব জট কাটিয়ে ২০১৮ সাল নাগাদ আমরা জোকা-মাঝেরহাট প্রকল্প সম্পূর্ণ করে দিতে পারব
বলেই আশা।’’

ওই কর্তা আরও বলেন, ‘‘মোমিনপুর স্টেশন-সহ ময়দানের নীচে ট্রেনের সুড়ঙ্গ তৈরি করা নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে এখনও আলোচনা চূড়ান্ত হয়নি। সে ক্ষেত্রে মোমিনপুর স্টেশনই বা কোথায় হবে আর ময়দানের নীচ দিয়ে যাওয়ার জন্য সুড়ঙ্গ কোথা থেকে শুরু হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই অবস্থায় হা-পিত্যেশ করে ওই সমস্যার সমাধানের জন্য বসে না থেকে আমরা জোকা পর্যন্ত পরিষেবা চালু করে দিতে চাইছি। তাতে মানুষের হয়রানি অনেকটাই কমবে।’’

মেট্রো কর্তাদের দাবি, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর প্রকল্পেও সেক্টর ফাইভ থেকে নিউ-গড়িয়া পর্যন্ত কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। সে ভাবে কোনও জটও নেই বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু সেক্টর ফাইভ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রো কোন পথে যাবে, তার কাজ কবে শেষ হবে— তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তাই আপাতত সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পরিষেবা চালু করে দিতে চান মেট্রো রেল কর্তারা। তাতে ইস্ট-ওয়েস্ট প্রকল্পের সঙ্গে ওই লাইন জুড়ে দেওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী মেট্রো রেল কর্তারা।

তাঁদের পরিকল্পনা মতো মেট্রো পরিষেবা ঠিক কবে চালু হবে, তার সময়সীমা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মেট্রো কর্তারা চাইছেন, ইস্ট-ওয়েস্টের সঙ্গেই বাকি দু’টি মেট্রো প্রকল্পও অন্তত কিছুটা চালু হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Metro administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE