প্রস্তাবিত উদ্যান প্রকল্পে বরাদ্দ হওয়া অর্থ আদৌ খরচ হয়েছে কি? স্থানীয় বাসিন্দারা নন, তৃণমূল পরিচালিত বিধাননগর পুরসভাকে চিঠি দিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর চাইলেন খোদ মন্ত্রী।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, বাগুইআটির পশ্চিম নারায়ণতলায় গত দু’বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আমরুত’ (অটল মিশন ফর রিজুভেনেশন অ্যান্ড আর্বান ট্রান্সফরমেশন) প্রকল্পে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি উদ্যান নির্মাণের কাজ চলছে। সবুজের মাঝে স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে দীর্ঘ সময় কাটাতে পারেন এবং শিশুরা খেলাধুলো করতে পারে, সে কথা ভেবেই ওই উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। নির্মাণকাজ শেষে উদ্যানটি যখন উদ্বোধনের একেবারে দোরগোড়ায়, তখনই ওই প্রকল্পের কাজের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু।
পুরভবন সূত্রের খবর, চিঠিতে মন্ত্রী জানিয়েছেন, উদ্যানটি এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে তাঁর মনে হয়নি। কয়েকটি গাছ, দোলনা এবং প্রবীণদের জন্য বসার একটি জায়গা তৈরি করতে কী ভাবে এত টাকা খরচ হয়, তা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মন্ত্রী। এর পরে স্থানীয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শম্পা চক্রবর্তীকে ডেকে মন্ত্রীর চিঠি দেওয়ার বিষয়টি জানান মেয়র সব্যসাচী দত্ত।
পুরভবন সূত্রের খবর, চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রীর পর্যবেক্ষণকে সম্মান জানিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের ভিত্তি ব্যাখ্যা করে পুরসভার এক আধিকারিক জানান, কেন্দ্রীয় অর্থে আরও অনেক ওয়ার্ডে প্রকল্পের কাজ চলছে। রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রীই যখন প্রকল্পের অর্থ খরচ নিয়ে সন্দিহান, সেই বার্তা কেন্দ্রের কাছে গেলে তার প্রভাব বাকি প্রকল্পগুলির উপরেও পড়তে পারে। তাই তড়িঘড়ি একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গোটা ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে কাউন্সিলরের। উদ্বোধনের পথে মন্ত্রীর চিঠির কাঁটা সরাতে তিনিও সক্রিয় হয়েছেন বলে খবর। ওই কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, উদ্যানটি যেখানে তৈরি হয়েছে, সেটি এক সময়ে পরিত্যক্ত একটি মাঠ ছিল।
আগাছার মধ্যে অসামাজিক কাজকর্ম চলত। দু’বছর আগে সেখানে উদ্যান তৈরির কাজ শুরু হলেও মাঝপথে ঠিকাদার কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে যান। শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলর তহবিল থেকে আলো, শৌচালয় নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়েছে।
হঠাৎ কেন এই চিঠি? তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাগুইআটি মেলায় গিয়ে ওই উদ্যানের উদ্বোধনের ঘোষণা মন্ত্রীর কানে পৌঁছয়। এর পরে উদ্যানের কী কাজ হয়েছে, সরেজমিন তা দেখে চিঠি দেন মন্ত্রী। যদিও পত্রাঘাতের পিছনে স্থানীয় রাজনৈতিক সমীকরণও কাজ করছে বলে বক্তব্য পুর আধিকারিকদের একাংশের। তাঁদের মতে, কাউন্সিলর শম্পার সঙ্গে মন্ত্রী তথা বিধায়কের সম্পর্ক খুব মধুর নয়। সেই কারণেই ওই উদ্যানের উদ্বোধনের কথা মন্ত্রীর জানা ছিল না।
মন্ত্রীর চিঠি প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন শম্পা। চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেননি মেয়রও। মন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy