Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতালে কুকুরের কামড়, জলাতঙ্কের ওষুধ পেতে হন্যে

শহরের বুকে একটি মেডিক্যাল কলেজে জলাতঙ্কের মতো জীবনদায়ী ওষুধ কেন নেই, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। উঠছে নানা প্রশ্নও।

কুকুরের কামড়ে আহত সেই শিশু। নিজস্ব চিত্র

কুকুরের কামড়ে আহত সেই শিশু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৫
Share: Save:

হাসপাতাল চত্বরে কুকুরের কামড়ে রক্তাক্ত হল সেখানকারই এক কর্মীর সন্তান। তার চিকিৎসা নিয়েও হল টানাপড়েন। অভিযোগ, জলাতঙ্কের টিকা নেই জানিয়ে সাধারণ টিটেনাস টক্সিড ইঞ্জেকশন দিয়ে দায় সারতে চান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর পরে তাকে রেফার করা হয় অন্য একটি হাসপাতালে। ঘটনার পরে কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলে অন্য হাসপাতালে গিয়ে অবশেষে জলাতঙ্কের টিকা পায় শিশুটি। বুধবার, এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা। শহরের বুকে একটি মেডিক্যাল কলেজে জলাতঙ্কের মতো জীবনদায়ী ওষুধ কেন নেই, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। উঠছে নানা প্রশ্নও।

এ দিন সকালে এন আর এসের সুপারের অফিসের সামনে কুকুর কামড়ায় রানি মল্লিক নামে সাড়ে চার বছরের ওই শিশুকে। তার কোমরের নীচের অংশের ক্ষত থেকে বেরোতে থাকে রক্ত। পরিবার সূত্রে খবর, হাসপাতাল চত্বরের ভিতরে কর্মী আবাসনেই থাকে সে। সুপারের অফিসের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে তাকে কুকুর কামড়ায়। অভিযোগ, সাবান জলে ধুয়ে প্রাথমিক পর্বের চিকিৎসা হাসপাতালে করা হলেও পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। রানির পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, জলাতঙ্কের টিকা নেই। তাই টিটেনাস দেওয়া হচ্ছে। এর পরে শিশুটকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রেফার করা হয়। জলাতঙ্ক প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দিতে পেরোয় কয়েক ঘণ্টা।

এ দিকে হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিশুটির ক্ষত ছিল গুরুতর। রক্ত বেরিয়ে গিয়েছিল। যা কি না কুকুরের কামড়ের ক্ষেত্রে ক্ষতের তৃতীয় স্তর। তাই জলাতঙ্কের ইঞ্জেকশনের পাশাপাশি চিকিৎসক ইমিউনো-গ্লোবিউলিন ওষুধ দেওয়ারও পরামর্শ দেন। সে নিয়েও টানাপড়েন চলে। কোথায় সেই ওষুধ মিলবে, তা জানতে কেটে যায় সময়। কিছু ক্ষণ হয়রানির পরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ব্যবস্থা হয়।

চিকিৎসকদের একাংশের প্রশ্ন, কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা না থাকলে কেন কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ করেননি? জলাতঙ্কের টিকা জীবনদায়ী ওষুধ। তা সত্ত্বেও এন আর এসের মতো মেডিক্যাল কলেজে সেই ওষুধ নেই কেন? স্বাস্থ্য দফতরকে কি সেটা জানানো হয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ দিকে, ওই হাসপাতালের ভিতরে গত কয়েক বছরে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫। পথকুকুরদের যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, সে দিকে কি নজর রেখেছিল হাসপাতাল? এ দিনের ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

যদিও কোনও প্রশ্নেরই স্পষ্ট উত্তর হাসপাতাল থেকে মেলেনি। সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও উত্তর মেলেনি। হাসপাতালের আর এক কর্তার যদিও দাবি, ‘‘অ্যান্টি-রেবিস টিকা হাসপাতালে রয়েছে। তবে দেশ জুড়েই এই টিকার সঙ্কট চলছে। আক্রান্তকে কোথাও রেফার করা হয়নি। রোগীর পরিবারই তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাই গাফিলতির প্রশ্নই নেই। কুকুর নিয়ে পুরসভার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dog Bite Rabies Health NRS Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE