বিহ্বল: ছেলে মহম্মদ কাইফকে (ডান দিকে) হারিয়ে কান্না মা নুসরত বেগমের। শুক্রবার, তিলজলায়। নিজস্ব চিত্র
বেলা বাড়লেই স্কুলে যেতে হবে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াকে। পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার কথা। সকালে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে বেরোনোর সময়ে তাই বারবার সময়মতো বাড়ি ফেরার কথা বলেছিলেন মা। কিন্তু ১২ বছরের ছেলেটির আর বাড়িই ফেরা হল না। বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলার সময়ে পুকুরে ডুবে মৃত্যু হল তার। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে তিলজলা এলাকার কোহিনুর মার্কেটের কাছে।
ওই বালকের নাম মহম্মদ কাইফ। কাইফের মা নুসরত বেগম জানান, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল ওই বালক। পৌনে ৯টা নাগাদ স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা নুসরতকে জানান, তাঁর ছেলে পুকুরে ডুবে গিয়েছে। কাইফের বাবা মহম্মদ নৌসদ স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। তাঁকেও খবর পাঠানো হয়। যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় থানার সঙ্গে। উদ্ধারকারী দল কিছু ক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ জানায়, পুকুর থেকে উদ্ধার করে বাইপাসের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা কাইফকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তার দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, এ দিন সকালে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলার সময়ে তাদের বল পুকুরে পড়ে যায়। কাইফ ও তার দুই বন্ধু বল তোলার জন্য পুকুরের পাশে যায়। অন্য দু’জন পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে বল তোলার চেষ্টা করলেও কাইফ জলে নেমে প়ড়ে। এর পরেই ঘটে বিপত্তি।
এই ঘটনার পরে ওই পুকুরের সংস্কার ও এলাকায় নজরদারি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বছর তিনেক আগেও এক কিশোর ওই পুকুরে ডুবে মারা গিয়েছিল। তখনই বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, পুকুরের চারপাশ বাঁধিয়ে সিঁড়ি বানিয়ে দেওয়া জরুরি। কিন্তু অভিযোগ, পুকুরের চারপাশ বাঁধানোর দাবি নিয়ে একাধিক বার স্থানীয় কাউন্সিলারের কাছে গেলেও তিনি কোনও কথা শোনেননি। একাধিক মারাত্মক দুর্ঘটনার পরেও স্থানীয় প্রশাসনের হুঁশ ফেরেনি। বাসিন্দাদের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জলি বসু অবশ্য বলেন, ‘‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে এ রকম ঘটনা এই প্রথম ঘটল। ভবিষ্যতে যাতে আর না হয়, তাই পুকুর সংস্কার করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy