—প্রতীকী চিত্র।
নলির কাছে মাংস ঝুলছে। দুই কব্জির উপরের অংশে গভীর ক্ষত। গোড়ালির কাছেও এমন ক্ষত যে হাড় দেখা যাচ্ছে। শরীর রক্তে মাখা। এমন অবস্থায় উলঙ্গ হয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া বছর আটেকের এক বালককে দেখে শুক্রবার সন্ধ্যায় চমকে যান বিদ্যাসাগর সেতু ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশকর্মী অভিষেক যাদব। জুবিলি লাইনের কাছে তিনি ওই বালককে দাঁড় করাতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় সে। দ্রুত হেস্টিংস থানায় খবর দেন ওই পুলিশকর্মী। এর পরে থানার গাড়িতেই বালকটিকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে সে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বালকের অবস্থা সঙ্কটজনক।
পুলিশ সূত্রের খবর, সে শুধু বলেছিল,— ‘আফজল রেস্তরাঁ’ এবং ‘আফসানা বেগম’। সেই সূত্র ধরেই হেস্টিংস থানা রাতে কড়েয়া থানা এলাকায় আফজল রেস্তরাঁর হদিস পায়। রাতেই সেখানে হানা দিয়ে পুলিশ জানতে পারে, সামনের ফুটপাতে আফসানা বেগম নামে এক মহিলা থাকেন। তাঁর বছর আটেকের ছেলে সোহেল হোসেন ওই দুপুর থেকে নিখোঁজ। ছেলের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানাতে দুপুরেই থানায় যান আফসানা। পুলিশ ফোনে ছবি দেখাতেই ছেলেকে চিনতে পারেন মহিলা। রাতেই ছেলের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
জিজ্ঞাসাবাদে আফসানা পুলিশকে জানান, পরিচারিকার কাজ করে তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে ফুটপাতে একাই থাকেন তিনি। বছর কয়েক আগে বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার গোরাচাঁদ লেনের মহম্মদ আরমানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁর। আফসানার দাবি, ‘‘আরমান কাজ করে না, উল্টে আমার থেকে টাকা নেয়। এই লকডাউনে কাজ বন্ধ। এত টাকা পাব কোথায়?’’ সেটা বলাতেই বুধবার আরমানের সঙ্গে তাঁর হাতাহাতি হয় বলে জানান আফসানা। ফুটপাতের অন্য বাসিন্দারা গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি মিটিয়েও দেন।
তাই আফসানার সন্দেহের তির আরমানের দিকে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে তাঁর ছেলেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযোগকারীর বাড়ি যে হেতু কড়েয়া থানা এলাকায়, তাই রাতেই লালবাজারের তরফে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কড়েয়াকে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ (খুনের চেষ্টা)-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত অধরা। লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এক রাতেই হেস্টিংস থানা তদন্ত গুটিয়ে এনেছে। অভিযুক্তকে ধরতে মোবাইলের অবস্থান দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy