Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Extortion

‘গুন্ডা ট্যাক্স’ না দেওয়ায় হামলা কড়েয়ার নির্মাণ সংস্থায়, ভাঙচুর, মারধর কর্মীদের

খাস কলকাতার বুকে গুণ্ডা ট্যাক্স! না দিলে হামলা, মারধর। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে মূল অভিযুক্ত। এমনই অভিজ্ঞতা মধ্য কলকাতার এক নির্মাণ ব্যবসায়ীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:০৩
Share: Save:

খাস কলকাতার বুকে গুন্ডা ট্যাক্স! না দিলে হামলা, মারধর। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে মূল অভিযুক্ত। এমনই অভিজ্ঞতা মধ্য কলকাতার এক নির্মাণ ব্যবসায়ীর।

হাই উইংস গ্রুপ নামে একটি নির্মাণ সংস্থা সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেকবাগান রো-তে একটি সাত কাঠা জমির উপর নির্মাণ কাজ শুরু করে।

সংস্থার অভিযোগ, কাজ শুরু করার পর থেকেই কিছু স্থানীয় সমাজবিরোধী নির্মাণ সাইটে এসে টাকা দাবি করে। সংস্থার অন্যতম মালিক আহমেদ রেজা বলেন, “আমরা কোনও বেআইনি নির্মাণ করিনি। পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী এবং অনুমতি নিয়ে কাজ হচ্ছে। তাহলে কেন গুন্ডা ট্যাক্স দেব?”

অভিযোগ, সেবারের মতো চলে যায় ওই যুবকরা। কিন্তু হুমকি দিয়ে যায়। প্রথমে সেই হুমকিকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি সংস্থার কর্তারা। কিন্তু ভুল ভাঙে শুক্রবার। নির্মাণ সংস্থার পক্ষ থেকে কড়েয়া থানায় যে অভিযোগ জানানো হয়েছে, শুক্রবার প্রায় ৪০-৫০ জন যুবক নির্মাণ স্থলে আসেন। তাঁরা কোনও কথা না বলে, এলোপাথাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। তাঁদের বাধা দিতে গেলে বেধড়ক মারধর করা হয় সাইট-ইনচার্জ এবং শ্রমিকদের।

আরও পড়ুন: ধর্ষণের ভিডিয়ো তুলে বারবার গণধর্ষণ কিড স্ট্রিটের পার্লারে

খবর পেয়ে সংস্থার কর্তারা কড়েয়া থানায় যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে পুলিশ আসে। তখনকার মতো অভিযুক্ত যুবকরা পালিয়ে যায় পুলিশকে দেখে। স্থানীয়দের সাহায্যে হামলাকারী যুবকদের কয়েকজনকে শনাক্ত করেন সংস্থার কর্মীরা। সেই অনুযায়ী ফারুক, মিঠুন, মুন্না, জুম্মান, ওয়াসিম সহ একাধিক যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর করে কড়েয়া থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই দলটি ওই এলাকায় ঠিক একই ভাবে একাধিক নির্মাণ সংস্থার কাছ থেকে গুণ্ডা ট্যাক্স আদায় করেছে। এরা প্রত্যেকেই এলাকায় শাসক দলের কর্মী হিসাবে পরিচিত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শাসক দলের কয়েকজন নেতা এদেরকে আড়াল করেন, তাই এদের এত বাড়বাড়ন্ত। আক্রান্ত শ্রমিকদের অভিযোগ, অন্যতম মূল অভিযুক্ত ফারুককে পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না। অথচ সে রোজ ওই নির্মাণ স্থলের সামনে এসেই চা খাচ্ছে। আড্ডা মারছে। তার পরও পুলিশ তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: হেনস্থায় বাধা কেন? গভীর রাতে ‘উচিত শিক্ষা’ পুলিশকর্মীকে

কলকাতা গোয়্ন্দা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার একাংশ জানিয়েছে, যাঁরা ওই তোলাবাজি চালাচ্ছে তাঁদের বেশ কয়েকজনের পুরনো অপরাধের ইতিহাস আছে। নির্মাণ সংস্থার পক্ষ থেকে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধানকেও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। স্থানীয় পুরপিতা শুকদেব চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “কে কোথায় কার নাম করে কি করছে তার খবর আমার কাছে নেই।” তবে শুধু এই নির্মাণ সংস্থা নয়, এলাকার একাধিক নির্মাণ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, কড়েয়া এলাকায় সমাজবিরোধীদের দাবি মত গুণ্ডা ট্যাক্স না দিলে কাজ করা কঠিন। পুলিশের সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক ব্যবসায়ী।

(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Extortion Karaya Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE