Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Diwali 2018

সল্টলেকে জলসা বন্ধ করতে গিয়ে মার খেল পুলিশ

করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্সের ফেজ ওয়ানের ওই পুজোর সম্পাদক সুকান্ত মিত্র এলাকায় তৃণমূলনেতা হিসাবে পরিচিত।

সল্টলেকের করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্সের ঘটনা। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

সল্টলেকের করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্সের ঘটনা। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ১৯:৫২
Share: Save:

কালীপুজোর জলসা থামাতে গিয়ে বেধড়ক মার খেল পুলিশ। শেষে প্রাণ বাঁচাতে পালাতে হলএক পুলিশ অফিসার এবং তাঁর সঙ্গী কনস্টেবলকে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্সের মধ্যে। পরে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করে পাঁচজনকে। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ নিরপরাধদের গ্রেফতার করেছে। আসল অপরাধী ফেরার।

করুণাময়ী হাউসিং কমপ্লেক্সের ফেজ ওয়ানের ওই পুজোর সম্পাদক সুকান্ত মিত্র এলাকায় তৃণমূলনেতা হিসাবে পরিচিত। তিনি ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি। বৃহস্পতিবার পুজো উপলক্ষে জলসার আগে ওই মঞ্চ থেকেই সম্বর্ধনা দেওয়া হয় বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত, বিধায়ক সুজিত বসুকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ করুণাময়ী পার্কে পৌঁছন বিধাননগর পুলিশের বিশেষ নজরদারি বাহিনীর একটি দল। পুলিশের অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ের পরও মাইক-সাউন্ড বক্স বাজিয়ে জলসা করার জন্য উদ্যোক্তাদের ডেকে সতর্ক করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাসিস্টান্ট সাব ইন্সপেক্টর অমল কাঁড়ার পুজো কমিটির সম্পাদক সুকান্ত মিত্রকে অবিলম্বে জলসা বন্ধ করতে বলেন।

আরও পড়ুন: দূষণ-দৌড়ে প্রথম এ বারের দীপাবলি​

আরও পড়ুন: তিন দিন পরেও মায়ের দুধ থেকে ‘বঞ্চিত’ পুঁটির সন্তান!

বিধাননগর পূর্ব থানাকে জানানো অভিযোগে ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন, তিনি বার বার অনুরোধ করার পরও উদ্যোক্তারা জলসা বন্ধ করেনি। উল্টে কিছু লোক জন পুলিশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিল চড় ঘুসি মারতে শুরু করে পুলিশকে। অভিযোগ মারধর করে পুলিশ কর্মীদের উর্দিও ছিঁড়ে দেওয়া হয়। কোনও মতে পুলিশ কর্মীরা পালিয়ে যান। পরে বড় বাহিনী নিয়ে গিয়ে ওই হাউসিং কমপ্লেক্সেরই দুই বাসিন্দা সন্দীপন ঘোষ এবং তাঁর ভাই সুপ্রতীম ঘোষ-সহ আকাশ সোনি, গনেশ কুলথিয়া ও শেখর জালানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি তিনজনের বাড়ি কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকায়। পুলিশ পুজো কমিটির সভাপতি-সহ উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে এফআইএর করেছে।

সুকান্ত মিত্র যদিও পুলিশের ওই অভিযোগ অতিরঞ্জিত বলে দাবি করেছেন। এ দিন তিনি বলেন,“এবারের অনুষ্ঠানে আমাদের মূল শিল্পী ছিলেন মূম্বইয়ের গায়ক বিক্রম রাঠোর। ১১টা২৫ মিনিটে পুলিশ যখন আসে তখন অনুষ্ঠান চলছিল। আমি ওই অফিসারের কাছে পাঁচ মিনিট সময় চাই। তিনি রাজি না হলে, আমরা শিল্পীকে বলে সঙ্গে সঙ্গে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিই।” তিনি আরও বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কিছু দর্শকের সঙ্গে ওই পুলিশ আধিকারিকদের বচসা হয়। তা-ও আমরা সেটা মিটিয়ে দিই। যখন পুলিশ ফিরে যাচ্ছিল তখন একজন যুবক মত্ত অবস্থায় পুলিশের গায়ে জল দিয়ে দেয়।’’ সুকান্ত মিত্রর দাবি, “পুলিশ ওই যুবককে ধরে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করলে তার কয়েকজন সঙ্গী পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে। উর্দি ছিঁড়ে যায় পুলিশের। তবে ওই যুবক কোনও ভাবে কমিটির কেউ নন। এমনকি এই আবাসনেও থাকেন না।”

বাসিন্দাদের দাবি, মূল অভিযুক্ত ওই সুনীল জায়সওয়াল এবং তাঁর সঙ্গীদের না ধরতে পেরে, যাঁরা গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন, এরকম নিরীহ লোকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও গোটা বিষয় নিয়ে মুখ খোলেননি স্থানীয় পুরপিতা সুধীর সাহা। তিনি বলেন,“এ রকম একটা গন্ডগোলের কথা শুনেছি। আমি বিশদে কিছু জানিনা।” শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে সরকার পক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেননি। সবারই এ দিন জামিন হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diwali Kali Puja Salt Lake Police Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE