অলঙ্করণ: তিয়ায়া দাস।
ঘুম থেকে উঠেই কোনও রকমে খাবার মুখে গুঁজে অফিস ছুটতে হয় বেহালার বাসিন্দা শঙ্কর সেনকে। এত তাড়া, যে বাড়ির খাবার ব্যাগে ভরার সময় থাকে না। অগত্যা দুপুরে টিফিন টাইমে ফুটপাতের ধারে ফ্রাইড রাইস-চিলি চিকেন, কখনও চাউমিন, কচুরি-তরকারি, কখনও আবার চিকেন রোল বা বিরিয়ানিই ভরসা শঙ্করের।
যাঁরা ঘুরে ঘুরে কাজ করেন বা অফিসের কাজে বেশির ভাগ সময়েই বাইরে থাকেন, তাঁদের ফুটপাতের খাবারের উপরেই ভরসা করতে হয়। প্রতি দিন ট্যাঁকের কড়ি খসিয়ে নামী রেস্তরাঁয় বসে রসনাতৃপ্তি অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শঙ্করের মতো আরও অনেককে ফুটপাতের খাবার খেয়েই দিন কাটাতে হয়।
ভাগাড়-কাণ্ডের পর সেই ফুটপাতের খাবার নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যেমন রোজ বাইরে খাওয়া শঙ্করের প্রশ্ন, ‘‘৮০ থেকে ৯০ টাকা দিয়ে যে বিরিয়ানি আমরা খাচ্ছি, তা কতটা নিরাপদ? অথবা দুটো চিকেনের টুকরো দিয়ে ৪০ টাকার চাউমিন? একটা আশঙ্কা তো তৈরি হয়ই।’’
আরও পড়ুন: পথে পড়ে অচৈতন্য বৃদ্ধ, অটো থামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বাঁচাল দুই কিশোরী
ফুটপাতের খাবার জোর করে বন্ধ করা যায় না। কিন্তু ভেজাল খাবার বা নিম্নমানের খাবারে নজরদারির উপায় রয়েছে। সে পথেই এ বার এগোতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। এমনিতে পুরকর্মীরা নিময় করে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে থাকেন। পরে তা পুরসভার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাতে যেমন সময় লাগে, তেমনই পদক্ষেপ করতেও দেরি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: শিল্পীর সম্মান চেয়ে মমতাকে চিঠি পান্নালাল-কন্যার
ভ্রাম্যমান ল্যাবরেটরির ভিতরে রয়েছে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার খাবারের ভেজাল রুখতে হঠাৎ হঠাৎ হানা দেবে পুরসভার ভ্রাম্যমান ল্যাবরেটরি। কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই এই গাড়ি ঘুরে বেরাবে। যখন, যেখানে মনে হবে, পুরকর্মীরা খাবার সংগ্রহ করে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখবেন, ওই খাবার আদৌ খাওয়ার যোগ্য কি না! যদি দেখা যায়, খাবারে ভেজাল রয়েছে দ্রুত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (খাদ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “সারা বছরই ঘুরবে এই পুরসভার গাড়িটি। আরও কয়েকটি গাড়ি আনা হবে।”
আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থার পরে চলন্ত অটো থেকে ধাক্কা ছাত্রীকে
ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এফএসএসএআই) থেকে এই অত্যাধুনিক এই গাড়িটি আনা হয়েছে। পরীক্ষার জন্যে যাবতীয় সরঞ্জাম রয়েছে। মাইক্রোওয়েভ, কম্পিউটার, ভেজাল খাবার সংরক্ষণ করার ফ্রিজ এবং আগুন নেভানোর সিলিন্ডারও রয়েছে ওই গাড়িতে। ওই গাড়িতে থাকবেন ফুড সেফটি অফিসারেরাও। দুধে ভেজাল মিশেছে কি না, ভোজ্য তেলে শরীরের পক্ষে ভাল কি না, মিষ্টিতে নিষিদ্ধ রং আছে কি না, সবই পরীক্ষার বন্দোবস্ত রয়েছে এই ভ্রাম্যমান ল্যবরেটরিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy