প্রতীকী ছবি।
ফোন করে আত্মীয়দের জানিয়েছিলেন, তাঁরা ট্রেনে উঠে পড়েছেন। পরদিন গিরিডি পৌঁছে খবর দেবেন। পৌঁছনোর সেই খবর আর আসেনি টিটাগড়ের বাড়িতে। আবার গিরিডির বাড়িতেও পৌঁছননি সুমন স্বর্ণকার ও তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে তানিশা। রবিবার ট্রেনে ওঠার পর থেকে দু’জনের আর খোঁজ মেলেনি। একটি অ্যাপ-ক্যাবে করে তাঁরা কলকাতা স্টেশনে গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সুমনের স্বামী রাজেশ স্বর্ণকার। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ওই দু’জনের খোঁজ শুরু করেছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, যে ট্রেনে চেপে মা-মেয়ের গিরিডি পৌঁছনোর কথা ছিল, সেই ট্রেন ছাড়ার পরেও তাঁদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন চিৎপুরে পাওয়া গিয়েছে। এই তথ্যে রহস্য আরও বেড়েছে। এ দিকে, খোঁজ না মেলায় সুমনের শ্বশুরবাড়ি এবং বাপের বাড়ি— দুই পরিবারই চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমনের বাপের বাড়ি টিটাগড়ের বৌবাজার এলাকায়। শ্বশুরবাড়ি ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে। তানিশা ছাড়াও সুমনের ১৭ বছরের এক ছেলে রয়েছে। মাসখানেক আগে গরমের ছুটিতে মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে এসেছিলেন সুমন। ছেলে রাজ ছিল গিরিডিতে।
সুমনের দাদা সুনীল শেঠ জানান, রবিবার গিরিডি যাওয়ার জন্য কলকাতা-পটনা এক্সপ্রেসের টিকিট কাটা ছিল তানিশাদের। সে দিন সন্ধ্যায় একটি অ্যাপ-ক্যাবে তিনিই মা-মেয়েকে তুলে দেন কলকাতা স্টেশন যাওয়ার জন্য। ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে। সুনীল বলেন, ‘‘রাত আটটা নাগাদ তানিশা আমার মোবাইলে ফোন করে জানায়, ওরা ট্রেনে বসে পড়েছে। তার পর থেকে ওদের আর কোনও খোঁজ পাইনি।’’
রাজেশ জানান, সুমন তাঁকে বলেছিলেন, ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ গিরিডি স্টেশনে ঢুকবে ট্রেন। রাত ন’টায় তিনি ফের সুমনকে ফোন করেন। কিন্তু তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। তিনি ভেবেছিলেন, চার্জ না থাকায় মোবাইল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ রাজেশ গিরিডি স্টেশনে যান। কিন্তু ট্রেন ছেড়ে গেলেও নামেননি সুমনরা। তিনি সুনীলদের ফোন করেন। আগের রাতে আটটার পরে আর তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি। মঙ্গলবার রাজেশ টিটাগড়ে আসেন। রাতেই তাঁরা টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগে অ্যাপ-ক্যাবের চালককেও সন্দেহের বাইরে রাখা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনে দেখা গিয়েছে, রবিবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে সেটি ক্যানাল ইস্ট রোডে ছিল। তত ক্ষণে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘অ্যাপ-ক্যাব বুক করা হয়েছিল সুমনের মোবাইল থেকে। ফলে চালকের কোনও তথ্য জানা যাচ্ছে না। ওই ক্যাব সংস্থার কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্যভেদ হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy