Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ধরে খাওয়া নয়, নিজস্বীর পরে জলে ফিরুক মাছ

আজ, রবিবার ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ়’ কৌশলের এই মাছ ধরা প্রতিযোগিতায় শহরের অনতিদূরে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুর একটি জলাশয়ে শামিল হচ্ছে এক ঝাঁক কর্পোরেট সংস্থা। বহুজাতিক, সর্বভারতীয় বা স্থানীয়— চেনা-অচেনা ১২টি সংস্থা মিলে তিন জনের দল গড়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

ঋজু বসু
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০১:৫৯
Share: Save:

ধরা যাবে, কিন্তু মারা যাবে না। ধরার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অক্ষত দেহে মৎস্য অবতারটিকে ফের জলেই ছেড়ে দেওয়া হবে। মাছের লোভ নয়, স্রেফ আনন্দের জন্য এই অহিংস মাছ-শিকার প্রচারের ঝোঁকে এখন পথ দেখাচ্ছে কলকাতা।

আজ, রবিবার ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ়’ কৌশলের এই মাছ ধরা প্রতিযোগিতায় শহরের অনতিদূরে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুর একটি জলাশয়ে শামিল হচ্ছে এক ঝাঁক কর্পোরেট সংস্থা। বহুজাতিক, সর্বভারতীয় বা স্থানীয়— চেনা-অচেনা ১২টি সংস্থা মিলে তিন জনের দল গড়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। এই অহিংস প্রতিযোগিতার হাত ধরে মাছের সংরক্ষণ ও জলাশয়ের যত্ন, দুটোই সম্ভব হবে বলে মনে করছেন দেশের পোড়খাওয়া মাছ-শিকারি তথা প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তারা।

কলকাতার শখের মাছ ধরার ইতিহাস অবশ্য নেহাতই আনকোরা নয়। সত্যজিৎ-সুকুমারখ্যাত রায় বাড়ির পূর্বপুরুষ উপেন্দ্রকিশোর-ভ্রাতা সারদারঞ্জন রায় ছিলেন তুখোড়
মাছ ধরিয়ে বা অ্যাঙ্গলার। উপেন্দ্রকিশোরের আর এক ভাই মুক্তিদারঞ্জনের নাতি, শিবাজী রায় এখন ৭৫-এর প্রবীণ। এ দেশের ‘অ্যাঙ্গলার মহলে’ এখনও একটি বিশিষ্ট নাম তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আগেকার বাঙালির মাছ ধরে রান্না করার সংস্কৃতি এ কালে চলে না। কিন্তু মাছ ধরার শখ বেঁচে থাকলে জলাশয়ের যত্ন ও মাছের সংরক্ষণে খামতি থাকবে না।’’

তাই কলকাতার বিভিন্ন জলাশয় সুভাষ সরোবর, রবীন্দ্র সরোবর, লাল দিঘি বা টালার ঝিলে আধুনিক সরঞ্জামে মাছ ধরা চালু করা জরুরি বলে মনে করেন শিবাজীবাবু। হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনও ‘ধরে ছাড়া’র কৌশলে মাছ ধরার পৃষ্ঠপোষক। নিউ টাউনের ইকোপার্কে মাছ ধরে ছেড়ে দেওয়ার প্রথাই বজায় রেখেছেন। সর্বভারতীয় অ্যাঙ্গলারদের এক সংস্থা গত বছরই উল্টোডাঙা বিধান শিশু উদ্যান পরিষ্কার করতে নেমেছিল। সংস্থার সহ-সভাপতি তথা কর্পোরেটদের অ্যাঙ্গলিং প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা চন্দন গুপ্তের মতে, ‘‘কর্পোরেটরা মাছ না মেরে স্রেফ বিনোদনের মাছ ধরায় যোগ দিলে পরিবেশ-সচেতনতার বার্তা যাবে।’’ অ্যাঙ্গলারদের সংস্থার সম্পাদক, চিকিৎসক সৈকত বারিক বলছেন, ‘‘পরিবেশ সচেতনতার পাঠ দিতে শিশুদের নিয়ে আমরা ক্যাম্প করেছি। কিন্তু কর্পোরেটদের নিয়ে কাজ করা আগে হয়নি।’’ এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিচ্ছেন কলকাতার একটি সর্বভারতীয় আলোপ্রস্তুতকারী সংস্থার এমডি সঞ্জয় ঘোষ। তাঁর মতে, ‘‘মাছ ধরায় মনঃসংযোগ বাড়ে। আবার মনটাও ফুরফুরে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fishing Badu Selfie
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE