থমকে পথ। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র
সকাল ৯টা। পরমা উড়ালপুলের উপরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে পার্ক সার্কাসমুখী গাড়ি। পার্ক সার্কাস মোড়ে যানজট ছাড়াতে তখন হিমশিম অবস্থা একাধিক ট্রাফিক সার্জেন্টের।
তড়িঘড়ি অফিস পৌঁছনোর আনন্দে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন রুবি-র বাসিন্দা দেবাশিস রায়চৌধুরী। সাড়ে ৯টা নাগাদ সায়েন্স সিটির কাছে উড়ালপুলে ওঠার রাস্তা বন্ধ করা। অগত্যা নীচের ভিড়ে ঠাসা রাস্তাই ধরতে হল।
বেলা পৌনে এগারোটা। উড়ালপুলে গাড়ির সারি একেবেঁকে ময়াল সাপের চেহারায়।
ফাইনাল পরীক্ষার বাকি চার দিন। তার আগে টেস্ট পরীক্ষার প্রথম দিনেই ডাহা ফেল লালবাজার! ট্রাফিক পুলিশের ফেসবুক পেজে দিনভর যানজট নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ, কটাক্ষ। মনদীপ বেদি নামে এক ব্যক্তির মন্তব্য, ‘‘যা-তা অবস্থা। থাম্বস ডাউন।’’
এজেসি বসু রোড উড়ালপুলের সঙ্গে পরমা উড়ালপুলের সংযোগকারী র্যাম্পটি আগামী সোমবার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলক ভাবে তা চালু করেছিল কলকাতা পুলিশ। তাতেই এই হাল। দুপুরের পরে জট কিছুটা কাটলেও আম-নাগরিকের প্রশ্ন, সকাল থেকে যানজট হলে স্কুল-কলেজ-অফিসে সময়ে পৌঁছনো যাবে কী করে? সাতপাঁচ না ভেবে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন অনেকেরই। পুলিশের একাংশও বলছেন, কংগ্রেস এগজিবিশন রোডে অপর র্যাম্পটি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এই ভোগান্তি কাটবে না।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউয়ের যানজট প্রায় গড়িয়াহাটে। গাড়ি নড়ছিল না গুরুসদয় দত্ত রোড, বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডেও। শেক্সপিয়র সরণি থেকেই গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে হয়! পুলিশের একাংশ বলছেন, ভবানীপুর, মৌলালির দিকের রাস্তা ধরেও সুরাহা হয়নি। কলকাতা পুলিশের এক অফিসার বলছেন, ‘‘একে তো পরমা উড়ালপুলের চাপ, তার উপরে বেকবাগানে স্কুলের ছুটির ভিড়। সব মিলিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়ি অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে এবং উড়ালপুলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। দুপুরের পর থেকে গাড়ির চাপ বা স্কুল ছুটির ভিড় কমায় কিছুক্ষণ যানজট ছিল না বললেই চলে। বিকেলে একাধিক স্কুল ছুটি হলে ফের যানজট চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমারকে ফোন বা এসএমএসে পাওয়া যায়নি। তবে পদস্থ ট্রাফিক-কর্তারা জানান, এমনটা হবে আঁচ করেছিলেন তাঁরা। রবিবার পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ভাবে এই যান চলাচল খতিয়ে দেখবেন ট্রাফিকের অভিজ্ঞ অফিসারেরা। তার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy