সংস্থার নাম লেখা এমনই সাইনবোর্ড থেকে রাজস্ব আদায় করতে বদলানো হল পুর আইন। নিজস্ব চিত্র
হোর্ডিংয়ে বড় করে নরম পানীয় বা সিগারেট সংস্থার নাম রয়েছে। হোর্ডিংয়ের নীচে খুদে-খুদে অক্ষরে রয়েছে দোকানের নাম। দোকানের নামের আড়ালে কার্যত ওই সিগারেট বা নরম পানীয় সংস্থারই বিজ্ঞাপন হচ্ছে। আবার কেউ কোনও সংস্থার নাম বা স্লোগান লেখা জামা পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমন হাজারো ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞাপনী কৌশল ছড়িয়ে রয়েছে শহর জুড়ে।
কিন্তু এ ধরনের বিজ্ঞাপন থেকে এত দিন লাইসেন্স-ফি, কর নিতে পারত না কলকাতা পুরসভা। কারণ পুর বিজ্ঞাপনী আইনে তেমন কোনও ধারাই ছিল না। এই বিজ্ঞাপনী চমকের জন্য রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে দেখে পুরসভা এ বার আইনে বড় সংশোধন করতে চলেছে। তার খসড়া প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। সেই খসড়া প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। পুরসভার দাবি, সংশোধিত হওয়ার পরে নতুন আইন অনেক শক্তিশালী হবে। তা দিয়ে নিত্য নতুন বিজ্ঞাপনী কৌশলকে হাতিয়ার করে কর ফাঁকি দেওয়া আটকানো যাবে।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরেই প্রচারের কৌশল বদলে ফেলেছে বিজ্ঞাপনী সংস্থা থেকে সাধারণ দোকানগুলিও। সেই কৌশলের ফাঁদে পুরসভার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। কারণ, এ ধরনের দোকান থেকে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত লাইসেন্স ফি আদায় করতে গেলে পুরকর্মীদের শুনতে হয়, ‘এটা বিজ্ঞাপন কোথায়? এ তো দোকানের নাম, দোকানের নামে আবার লাইসেন্স ফি কী’! মানুষ বা অন্য কোনও মাধ্যম ব্যবহার করে ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞাপন কৌশলের ক্ষেত্রেও একই ভাবে কর আদায়ের সুযোগ ছিল না পুরসভার।
এ বিষয়টি মাথায় রেখেই পুর আইনের ১৪ নম্বর অধ্যায়ে একাধিক সংশোধনী আনা হচ্ছে। যেমন ওই অধ্যায়ের অন্তর্গত ২০৩ (বি) ধারা সংশোধন হচ্ছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বিজ্ঞাপনের ‘জায়গা’র স্থলে ‘ভ্রাম্যমাণ বস্তু, মানুষ বা অন্য যে কোনও মাধ্যম’কে যুক্ত করা হচ্ছে। আবার কোনও দোকানে বেআইনি ভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট দোকানকে কারণ দর্শানোর পাশাপাশি ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের কথাও বলা হচ্ছে। এক পদস্থ পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিজ্ঞাপনের কৌশল বদলেছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আইনে সংশোধনী না আনা হলে পুরসভার রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। তাই এই আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy