Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জলাভূমি বুজিয়ে কি বাড়ি, সমীক্ষায় পুরকর্মীরা

জলাভূমি ভরাট করে নির্মাণের অভিযোগে সম্প্রতি নয়াবাদে একটি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন। তার পরেই পুরসভার কর্তাদের নির্দেশ, ওই এলাকায় জলাভূমি বুজিয়ে যে সব বাড়ি তৈরি হয়েছে তার সবিস্তার খোঁজ নিতে হবে। সেই কাজ করতেই পুরসভার কর্মী ও অফিসারেরা ওই এলাকায় ঘুরতে শুরু করেছেন। রাজ্য সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে নেওয়া তথ্য অনুসারে ম্যাপ নিয়ে এলাকায় ঘুরছেন তাঁরা।

জলা বুজিয়ে এ ভাবেই নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

জলা বুজিয়ে এ ভাবেই নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৫
Share: Save:

জলাভূমি ভরাট করে ফ্ল্যাট বা বহুতল তৈরি হয়নি তো? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এখন কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় সমীক্ষা করছেন পুরসভার কর্মীরা। আর এই সমীক্ষা ঘিরে সেখানকার বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

জলাভূমি ভরাট করে নির্মাণের অভিযোগে সম্প্রতি নয়াবাদে একটি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন। তার পরেই পুরসভার কর্তাদের নির্দেশ, ওই এলাকায় জলাভূমি বুজিয়ে যে সব বাড়ি তৈরি হয়েছে তার সবিস্তার খোঁজ নিতে হবে। সেই কাজ করতেই পুরসভার কর্মী ও অফিসারেরা ওই এলাকায় ঘুরতে শুরু করেছেন। রাজ্য সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে নেওয়া তথ্য অনুসারে ম্যাপ নিয়ে এলাকায় ঘুরছেন তাঁরা।

পুরসভার এক অফিসার জানান, গত কয়েক দিনে প্রায় ৭৫টির মতো বাড়ি এবং ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের কাছে গিয়ে বলা হয়েছে জমির কাগজপত্র পুরসভায় জমা দেওয়ার জন্য। কেউ ১০ বছর, কেউ ১৫ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে বাস করছেন ওই এলাকায়। হঠাৎ করে পুরসভার এই উদ্যোগ চিন্তা বাড়াচ্ছে তাঁদের। সমীক্ষার পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন জলাশয়ের পাড়ে নোটিস বোর্ড ঝুলিয়ে দিচ্ছে পুরসভা। তাতে লেখা হয়েছে, ‘পুকুর ভরাট করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। জলাভূমি আমাদের পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আইন অমান্যকারীদের জন্য আর্থিক জরিমানা এবং কারাবাসের বিধান আছে।’

পুরসভা সূত্রের খবর, একটা সময়ে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার নয়াবাদ, বরাখোলা, চকগনিয়াগাছি এবং কালিকাপুর এলাকার বহু জমি পুকুর, খাল, বিল এবং ডোবায় ভর্তি ছিল। লেখা ছিল, ‘বিল: মাছ চাষ’। দিন কয়েক আগে সে কথা স্বীকারও করেছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি এই মন্তব্যও করেছিলেন, ওই সব জলাভূমি ভরাট করে নির্মাণ বেশিরভাগটাই হয়েছে বাম আমলে। শোভনবাবুর কথায়, ‘‘এমন অনেক তিন-চারতলা বাড়ি, ফ্ল্যাট রয়েছে যার বিল্ডিং অনুমোদন, নিকাশির অনুমোদন বা মিউটেশন— কিছুই নেই।’’

পুরসভার এক অফিসার জানান, ব্লক ল্যান্ড রেভিনিউ অফিসারের রিপোর্ট নিয়ে পুরকর্মীরা ওই সব বাড়ি এবং ফ্ল্যাটে যাচ্ছেন। সেখানকার বাসিন্দাদের বলা হচ্ছে জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে পুরসভার কর মূল্যায়ন দফতরে যোগাযোগ করতে।

কিন্তু জমির চরিত্র বদলের যথাযথ প্রমাণ না থাকলে কী করবে পুর প্রশাসন? জানতে চাইলে পুরসভার এক অফিসার বলেন, ‘‘কর মূল্যায়ন দফতরকে শুধু কাগজপত্র দেখতে বলা হয়েছে। সেই কাজ তাঁরা করছেন।’’ তিনি জানান, বাকিটা ঠিক করবেন পুর প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। যদিও এ বিষয়ে মেয়র বা পুর কমিশনার, কেউই মুখ খুলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Survey Illegal Construction Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE