Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজের ফ্ল্যাটে যুবকের দেহ উদ্ধার, রহস্য

মঙ্গলবার গভীর রাতের এই ঘটনায় গোলামের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কথা বলা হয়েছে তাঁদের বছর দশেকের দুই ছেলের সঙ্গেও। পুলিশ জানায়, মৃতের স্ত্রী এবং সন্তানদের বক্তব্যে গরমিল রয়েছে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৮
Share: Save:

দুই সন্তানকে নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী। রাতে ফিরে খাওয়া সারেন একসঙ্গে। খাওয়াদাওয়ার পরে গল্প সেরে ঘুমোতেও যান একসঙ্গেই। মধ্যরাতের পরে সেই স্বামীরই দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে তিলজলা থানা এলাকার জি জে খান রোডে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম গোলাম কাদের (৩০)।

মঙ্গলবার গভীর রাতের এই ঘটনায় গোলামের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কথা বলা হয়েছে তাঁদের বছর দশেকের দুই ছেলের সঙ্গেও। পুলিশ জানায়, মৃতের স্ত্রী এবং সন্তানদের বক্তব্যে গরমিল রয়েছে। পুলিশ অবশ্য কারও নাম প্রকাশ করেনি। গ্রেফতারও করা হয়নি কাউকে। মৃতদেহের ময়না-তদন্তের পরেই রহস্যের কিছুটা তল পাওয়া সম্ভব বলে তদন্তকারীদের দাবি।

পুলিশ জানায়, বুধবার ভোরে খবর আসে জি জে খান রোডের একটি বহুতলের বাসিন্দা গোলামের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে বাড়ির লোকজন গোলামকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে ঢোকার মুখেই গোলামের মৃত্যু হয় বলে জেনেছে পুলিশ। তার পরেই গোলামের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তাঁর স্ত্রী ও আত্মীয়েরা। তাঁর শেষকৃত্যের প্রক্রিয়াও শুরু করে দেন তাঁরা। এর পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। গোলামের দেহ ফের ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে সরকারি ভাবে মৃত ঘোষণা করার পরে ময়না-তদন্তের জন্য দেহটি পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, কী ভাবে গোলামের মৃত্যু হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর কারণ জানার আগেই সৎকারের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ার জন্যই পুলিশের সন্দেহ হয়। এর পরে মৃতের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, মঙ্গলবার রাতে দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন গোলাম। বাড়ি ফিরে খাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রীর দাবি, রাতে স্বামীর পাশে ঘুমোলেও তাঁর মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, তিনি জানেন না। রাতে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য উঠে তিনি দেখেন, মেঝেয় গোলামের দেহ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যদিও কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশন) কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটি বাচ্চা অবশ্য অন্য কথা বলেছে। তার দাবি, রাতে বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হতে দেখেছে সে। মৃত্যুর কারণ জানতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’ মৃতের গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মৃত্যুর প্রাথমিক কারণও পুলিশ বলতে নারাজ।

জি জে খান রো়ডে গিয়ে দেখা যায়, গোলামের ফ্ল্যাটের দরজা তালাবন্ধ। প্রতিবেশীরা জানান, গোলামের স্ত্রী এবং সন্তানকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে নিয়ে গিয়েছে। প্রতিবেশীদের আরও দাবি, আগে কখনও ওই স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে ঝামেলা হতে দেখেননি তাঁরা। এমনকি, গোলামের স্ত্রীর নামও তাঁরা কেউ জানেন না। এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘এখানে সকলে নিজের মতো থাকেন। কেউ কাউকে চিনি না আমরা। আজ সকালেই কান্নাকাটি চিৎকার শুনে জানতে পারি ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Youth Mystery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE