Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

দুর্ঘটনা না খুন? বাঁশদ্রোণীতে যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য

হালদারের বাড়ি সোনাপুরের রেনিয়া এলাকায়। তাঁর সঙ্গী সমীর মজুমদারের বাড়িও রেনিয়াতেই। কী করে ঘটল এই ঘটনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।

মৃত বিশ্বজিৎ হালদার।

মৃত বিশ্বজিৎ হালদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ১৬:০৪
Share: Save:

ভোর রাতে বাড়ির সামনে বিকট আওয়াজ। তড়িঘড়ি বাইরে এসে বৃদ্ধা দেখেন, রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন দু’জন যুবক।

ওই দৃশ্য দেখেই বাঁশদ্রোণী নতুন বাজারের বাসিন্দা অণিমা সরকার তাঁর মেয়েকে জানান। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ১০০ ডায়াল করে পুলিশকে খবর দেন। বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ এসে দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে দুই যুবকের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। মৃত বিশ্বজিৎ হালদারের বাড়ি সোনাপুরের রেনিয়া এলাকায়। তাঁর সঙ্গী সমীর মজুমদারের বাড়িও রেনিয়াতেই। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বিশ্বজিৎ এবং তাঁর সঙ্গী দু’জনেই নকল সিলিংয়ের ব্যবসা করেন।

কিন্তু কী করে ঘটল এই ঘটনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।

আরও পড়ুন
ভাড়া বাড়তেই বাসের ভিড় মেট্রোয়

তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে দাবি করেছিলেন, বেপরোয়া বাইক চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা। আর তার জেরেই মৃত্যু। কিন্তু দুর্ঘটনার তত্ত্ব আদৌ মানতে রাজি নন বিশ্বজিতের পরিবার। বিশ্বজিতের বাবা অমর হালদারের দাবি— দুর্ঘটনা নয়, খুন করা হয়েছে বিশ্বজিতকে।

কিন্তু কেন পরিবারের এ রকম মনে হল?

অমরবাবুর প্রশ্ন, “যদি বেপরোয়া বাইক চালিয়ে দুর্ঘটনা হয়, তবে তার চিহ্ন থাকবে বিশ্বজিতের বাইকেও। অথচ বড়সড় সংঘর্ষের কোনও চিহ্নই নেই বাইকের। সে রকম কোনও ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি।”

আরও পড়ুন
রেললাইনে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার, রহস্য

তদন্তকারীদের দাবি, বেপরোয়া বাইক চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনার জেরেই মৃত্যু। কিন্তু দুর্ঘটনার তত্ত্ব আদৌ মানতে রাজি নন মৃতের পরিবার।

দুর্ঘটনার তত্ত্বের বিরুদ্ধে তাঁর আরও যুক্তি, “পাড়ার মধ্যে ওই সরু রাস্তায় প্রচণ্ড গতিতে বাইক চালানো যায় না।” তিনি বলেন, “শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বা‌ইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোয় বিশ্বজিৎ। তার আগে নাকি একটি ফোন আসে বিশ্বজিতের। ফোনে উল্টোদিকের ব্যক্তির সঙ্গে তর্কবিতর্ক হচ্ছিল বিশ্বজিতের।” রাতে বাড়ি থেকে বেরনোর পর নাকি বার বার ফোন করা হয়েছিল বিশ্বজিতকে। কিন্তু বিশ্বজিৎ ফোন ধরেননি।

এই সমস্ত কারণেই বিশ্বজিতের মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়েছে বলে মানতে পারছেন না তাঁর পরিবার। তাঁরা অভিযোগ দায়ের করবেন থানায়, জানিয়েছেন বিশ্বজিতের বাবা।

অন্য দিকে, প্রাথমিক তদন্তর পর পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বজিৎ বা তাঁর সঙ্গী সমীর— কেউ হেলমেট পরে ছিলেন না। তদন্তকারীদের ধারণা, জোরে বাইক চালাতে গিয়েই বেসামাল হয়ে ধাক্কা মারে বাইক।

তদন্তকারীরা যদিও পরিবারের তোলা প্রশ্ন খতিয়ে দেখছেন। তাঁরা চেষ্টা করছেন আহত সমীরের সঙ্গে কথা বলার। কারণ সে প্রত্যক্ষদর্শী। কিন্তু সমীরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়, এখনও পুলিশ তাঁর বয়ান রেকর্ড করতে পারেনি। পাশাপাশি, তাঁরা রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, মোবাইল কল রেকর্ড খতিয়ে দেখছেন। রাতে এই দুই যুবক কোথায় ছিলেন, সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Death Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE