Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বধূ-খুনের কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা

পরিচয় মিলল চৌবাগার লকগেট থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতা মহিলার। তাঁর নাম অর্চনা পালংদার (৩৫)। বাড়ি উল্টোডাঙা থানা এলাকার জওহরলাল দত্ত রোডে।

স্ত্রী অর্চনা পালংদারের (ডান দিকে) দেহ শনাক্ত করতে এনআরএস হাসপাতালে তাঁর স্বামী পিন্টু পালংদার। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

স্ত্রী অর্চনা পালংদারের (ডান দিকে) দেহ শনাক্ত করতে এনআরএস হাসপাতালে তাঁর স্বামী পিন্টু পালংদার। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

পরিচয় মিলল চৌবাগার লকগেট থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতা মহিলার। তাঁর নাম অর্চনা পালংদার (৩৫)। বাড়ি উল্টোডাঙা থানা এলাকার জওহরলাল দত্ত রোডে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার সংবাদপত্রে মহিলার ছবি প্রকাশিত হওয়ার পরে এনআরএস হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তাঁর স্বামী পিন্টু পালংদার স্ত্রীর দেহ শনাক্ত করেন। পিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তদন্তকারীদের অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন হয়েছেন অর্চনা। তবে কী ভাবে দেহটি লকগেট এলাকায় পৌঁছল, রাত পর্যন্ত তা জানতে পারেনি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার আনন্দপুর থানার চৌবাগা লকগেট থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সালোয়ার-কামিজ পরা অর্চনার দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ দিন শনাক্তকরণের পরে জানা গিয়েছে, অর্চনার চোদ্দো বছরের একটি মেয়ে ও সাত বছরের ছেলে রয়েছে। পিন্টু কালিকাপুরে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। ময়না-তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় অর্চনাকে। পুলিশের অনুমান, বুধবার রাতে কিংবা বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

পিন্টু পুলিশকে জানিয়েছেন, গত বুধবার দুপুরে অর্চনা জানবাজারে বাপের বা়ড়ি যাচ্ছেন বলে বেরোন। তার পর থেকে খোঁজ মিলছিল না তাঁর। শ্বশুরবাড়িতে খোঁজ নিয়ে পিন্টু জানতে পারেন, স্ত্রী সেখানে যাননি। রাতেই উল্টো়ডাঙা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তিনি। পিন্টু অর্চনার সঙ্গে সম্পর্কিত দু’জন পুরুষের নাম করেছেন। তাঁদের এক জনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডে এবং অন্য জন উল্টোডাঙা এলাকার বাসিন্দা।

তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ‘‘পিন্টু জেরায় জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর সম্পর্কে খোঁজ করায় তাঁকে বলা হয়েছিল, অর্চনা কোথাও খুন হয়ে পড়ে রয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নিতে। তাই কাউকেই আমরা সন্দেহের বাইরে রাখছি না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অর্চনার বাপের বা়ড়ির লোকেদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেই সঙ্গে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে পিন্টুকেও।

এ দিন মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে পিন্টু বলেন, ‘‘আজ সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকেই ডেকে বলা হয়, অর্চনার দেহ উদ্ধার হয়েছে। আমাকে খবরের কাগজে ছাপা ছবিও দেখানো হয়।’’ পুলিশ জেনেছে, অর্চনার সঙ্গে পিন্টুর অশান্তি লেগেই থাকত। বছর কয়েক আগে অর্চনা স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে নির্যাতনের অভিযোগও জানিয়েছিলেন। পিন্টু এবং অর্চনার পরিজনেদের কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, অর্চনা এর আগে দু’বার স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বছর চারেক আগে উল্টোডাঙার এক বাসিন্দার সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন। পরে ফিরে আসেন। মাস কয়েক আগে ফেসবুকে পরিচয় হওয়া এক যুবকের সঙ্গেও চলে যান তিনি। ফের ফিরে আসেন। তার পরেও ওই দু’জনের সঙ্গে অর্চনার যোগাযোগ ছিল বলে জেনেছে পুলিশ।

কিন্তু উল্টোডাঙা থেকে জানবাজারে যাবেন বলে বেরিয়ে কী ভাবে অর্চনা চৌবাগায় পৌঁছলেন, তা স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। অর্চনার মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সন্দেহভাজনদের ফোনের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য। এ দিন মর্গে গিয়েছিলেন হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। এই ঘটনায় একটি খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

House Wife Murder Mystery Extra Marital Affair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE