নেতাজি ভবন মেট্রো স্টেশনের মহিলা কর্মীরা। —ফাইল চিত্র
মহিলাদের ক্ষমতায়নের পথে এক ধাপ এগিয়েও দেবীপক্ষে ফের পিছিয়ে আসতে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। অন্তত পুজোর কয়েক দিনের জন্য তো বটেই।
গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নেতাজি ভবন মেট্রো স্টেশনকে সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুজোর সময়ে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত ওই স্টেশন তার সেই বৈশিষ্ট হারাচ্ছে। অন্য সব মেট্রো স্টেশনের মতোই নেতাজি ভবনে ওই তিন দিন পুরুষ ও মহিলা কর্মীরা একসঙ্গে কাজ করবেন। অর্থাৎ, আগের মতো মহিলা স্টেশন মাস্টার, মহিলা টিকিট কাউন্টার কর্মী, মহিলা প্যানেল অপারেটর, মহিলা রক্ষী থাকবেন না। তার বদলে সব ক’টি ক্ষেত্রেই পুরুষ ও মহিলা কর্মীরা ভাগাভাগি করে কাজ করবেন।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রশাসনিক কারণে সার্বিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থেই ওই সিদ্ধান্ত।
তবে কি মেট্রোয় পুজোর ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে মহিলারা অনুপযুক্ত?
মেট্রোকর্তাদের দাবি, বিষয়টি আদৌ তেমন নয়। ওই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে লিঙ্গ-বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। পুজোর কয়েক দিনে ‘সার্বিক’ মেট্রো পরিষেবায় মহিলা কর্মীদের আরও দক্ষ ভাবে ব্যবহারের স্বার্থেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কী ভাবে? মেট্রো সূত্রের খবর, নেতাজি ভবন স্টেশনে মোট ৩০ জন মহিলা কর্মী রয়েছেন। সপ্তমী থেকে নবমী, পুজোর এই তিন দিন দুপুর ১টা ৪০ মিনিট থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু থাকবে। ওই সময়ে যাত্রী পরিষেবা সুষ্ঠু রাখতে প্রায় সব ক’টি মেট্রো স্টেশনেই অতিরিক্ত কর্মীর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। কার্যত ছুটি বাতিল করে এক স্টেশন থেকে কর্মীদের অন্য স্টেশনে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে। সে ভাবেই শুধু নেতাজি ভবন নয়, পুজোর সময়ে অন্য স্টেশনগুলিতেও মহিলা কর্মীদের চাহিদা বেড়েছে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি।
এক মেট্রোকর্তা বলেন, “পুজোর সময়ে প্রচুর সংখ্যক মহিলারাও মেট্রোয় যাতায়াত করেন। ফলে সব স্টেশনেই নানা রকম সমস্যা সামলানোর ক্ষেত্রে মহিলা কর্মীদের উপস্থিতি আবশ্যক হয়ে পড়ে। সেই প্রয়োজন মেটাতেই এই ব্যবস্থা।”
বছরের অন্য সময়ের তুলনায় পুজোর তিন দিন নেতাজি ভবন মেট্রো স্টেশনেও যাত্রী-সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের ধারণা। ওই ভিড় সামলাতে গেলে যত সংখ্যক মহিলা কর্মী ও রক্ষীর প্রয়োজন, তাতে অন্য স্টেশনে টান পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে পুরো ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে।
মেট্রোর এক কর্তা বলেন, “পুরুষ কর্মীদের মতো মহিলারাও যাতে উৎসবের মরসুমে কাজের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিশ্রাম এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সময়টুকু পান, তা নিশ্চিত করাটাও জরুরি।”
কী বলছেন ওই মেট্রো স্টেশনের মহিলা কর্মীরা?
তাঁদের কথায়, “দায়িত্ব তো সারা বছর ধরেই পালন করতে হয়। পুজোর সময়েও করতে হবে। কোথায় পালন করছি, সেটা বড় কথা নয়। দায়িত্ব থাকছেই।”
তবে, সপ্তমী থেকে নবমী পেরিয়ে বিজয়া দশমীতেই আবার পুরনো ব্যবস্থা ফিরছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy