Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শিশু উদ্ধারের ‘ইনাম’ পাবে না কেউ: পুলিশ

টিনা সাধুখাঁ, রেখা দাস, সোমা জানা, টুম্পা দাস— মানিকতলা থানার মুরারিপুকুরের চার সাধারণ গৃহবধূ। কিন্তু গত ১৪ মার্চ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া শিশু উদ্ধারের ঘটনার পরে এই চার মহিলাই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন।

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

টিনা সাধুখাঁ, রেখা দাস, সোমা জানা, টুম্পা দাস— মানিকতলা থানার মুরারিপুকুরের চার সাধারণ গৃহবধূ। কিন্তু গত ১৪ মার্চ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া শিশু উদ্ধারের ঘটনার পরে এই চার মহিলাই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। কারণ চুরি যাওয়া শিশুটি উদ্ধারের পরে ওই চার মহিলা জানিয়েছিলেন, তদন্ত করে তাঁরাই শিশু-সহ ওই চুরিতে অভিযুক্ত চিন্ময়ী বেজকে খুঁজে বার করেছিলেন এবং পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।

তবে কলকাতা পুলিশ জানিয়ে দিল ওই দিন তদন্তে নেমে পুলিশই খুঁজে পেয়েছিল শিশু-সহ চিন্ময়ী বেজকে। ফলে ওই শিশু চুরি যাওয়ার পরে কলকাতা পুলিশ যে ১ লক্ষ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল, তা পাবেন না কেউই।

আরও পড়ুন: অ্যাপোলো-কাণ্ডে ‘শেষ’ দেখতে চান গুঞ্জার মা-বাবা

লালবাজার সূত্রের খবর, ওই দিন শিশু চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা শিশুর মা সরস্বতী নস্করের কাছ থেকে সবুজ শাড়ি পরা এক মহিলার (যিনি নিজেকে হাসপাতালের আয়া বলে দাবি করেছিলেন) খোঁজ পান। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে তাঁর কাছেই শিশুটিকে দিয়ে তিনি ফের ওয়ার্ডে ফিরে গিয়েছিলেন কার্ড আনতে। ফিরে দেখেন শিশু-সহ ওই মহিলা নেই। চুরি যাওয়া শিশুর মায়ের কাছে সেই মহিলার বিবরণ শুনেই হাসপাতাল এবং বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে শুরু করে পুলিশ। মিলে যায় সেই ফুটেজও। এ দিকে এর মধ্যেই কলকাতা পুলিশের তরফে খোদ যুগ্ম-কমিশনার (গোয়েন্দা) বিশাল গর্গ সংবাদমাধ্যমের সামনে মৌখিক ভাবে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। পরে রাতেই শিশু-সহ চিন্ময়ীকে আটক করে পুলিশ।

কিন্তু টিনা, রেখা, সোমা ও টুম্পা শিশু উদ্ধারের পরে সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেন, মুরারিপুকুরের বাসিন্দা চিন্ময়ীকে হঠাৎ কোলে শিশু-সহ বাড়িতে ঢুকতে দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। তাঁরা চিন্ময়ীর শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে জেরা করেন এবং পরে স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী ও পুলিশে খবর দেন। তাঁদের দাবি ছিল, শিশুটিকে তাঁরাই খুঁজে এনেছিলেন সে দিন।

বৃহস্পতিবারও পুলিশের দাবি উড়িয়ে টিনা বলেন, ‘‘সেদিন চিন্ময়ী যে শিশুটিকে নিয়ে এসেছে, তা আমি প্রথমে আমার স্বামীকে জানাই। তিনি তখন মেডিক্যাল কলেজেই ছিলেন। তিনিই পুলিশকে জানান।’’ টিনার পাশাপাশি সোমাও বলেন, ‘‘পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করার পরে আমাদের নাম-ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিল। বলেছিল, দরকার পড়লে ডাকবে। এখন কী করে বলছে আমরা খুঁজে দিইনি, তারা নিজেরাই খুঁজেছে?’’

উল্টো দিকে কাউন্সিলরের দাবি ছিল, ওই চার মহিলা বিষয়টি জানলেও পুলিশে খবর তিনিই দিয়েছিলেন। কিন্তু এঁদের সব দাবি কার্যত উড়িয়ে দিয়ে লালবাজারের দাবি, সে দিন চিন্ময়ীর সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্তে নেমে গোয়েন্দারাই খোঁজ পান তাঁর। কোনও মহিলা বা কাউন্সিলর কেউ-ই খুঁজে দেননি শিশুটিকে। ফলে পুরস্কারের ঘোষণা করা হলেও সেটি পাবেন না কেউ-ই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Claimants Kolkata Police infant trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE