Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সাঁতার-পুলে জমেছে জল, আতঙ্কে পাড়া

লেকটাউনের ওই ক্লাবে সুইমিং পুল রয়েছে দু’টি। একটি বড়দের। অন্যটি ছোটদের। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে সাঁতারের প্রশিক্ষণ।

এ ভাবেই পড়ে রয়েছে সাঁতারের পুলটি। বুধবার, লেক টাউনে। —নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই পড়ে রয়েছে সাঁতারের পুলটি। বুধবার, লেক টাউনে। —নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে শেষ হয়ে গিয়েছে সাঁতারের প্রশিক্ষণ। তার পর থেকেই সুইমিং পুল বন্ধ। এখন সেই পুলে সাঁতার কাটতে বা স্নান করতে কেউ নামেন না। অথচ, পুলের জল বার করে দেওয়া হয়নি। লেকটাউন সুইমিং পুলের সেই অব্যবহৃত জলেই এখন নিশ্চিন্তে বংশবিস্তার করে চলেছে মশারা। এমনই অভিযোগ ওই এলাকার শঙ্কিত বাসিন্দাদের। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। চতুর্দিকে ডেঙ্গির এমন প্রকোপের কথা জেনেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ কেন এত দিন ধরে ওই পুলের জল জমিয়ে রেখেছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে ওই সুইমিং পুলে হানা দেওয়া উচিত দক্ষিণ দমদম পুরসভার।

লেকটাউনের ওই ক্লাবে সুইমিং পুল রয়েছে দু’টি। একটি বড়দের। অন্যটি ছোটদের। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে সাঁতারের প্রশিক্ষণ। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, সাঁতারের প্রশিক্ষণ চলাকালীন পুলের জল নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত জল সে ভাবে পরিষ্কার হয় না। রমেশ অগ্রবাল নামে ওই পাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এ বছর ডেঙ্গি যে ভাবে মহামারির আকার ধারণ করেছে, তাতে পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে পুলের জল ফেলে দেওয়া উচিত ছিল। ওই জল বদ্ধ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। সেখানে মশা জন্মাচ্ছে। সেই সঙ্গে নানা আবর্জনাও ভাসছে।’’

দীর্ঘদিন জল পরিষ্কার না হওয়ায় ওই পুলের নীচে জমে গিয়েছে চাপ চাপ শ্যাওলা। উপরে ভাসছে নোংরা। এক জন পুরকর্মীকে দেখা গেল, জাল নিয়ে সেই ভাসমান নোংরা পরিষ্কার করছেন। বড়দের পুলের তুলনায় অনেক ভাল অবস্থা ছোটদের পুলটির। সেখানকার জল অনেকটাই পরিষ্কার।

জল ফেলা হয়নি কেন? ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানালেন, সাঁতারের মরসুমের পরে, অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ওই সুইমিং পুল ও সংলগ্ন একটি হলঘর বিয়েবাড়ি হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়। পুলের জলে তখন ফোয়ারার ব্যবস্থা করা হয়। তাই পুলের জল পুরোপুরি ফেলে দেওয়া হয় না। যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এ বার অন্তত ডেঙ্গি পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে জল ফেলে দেওয়া উচিত ছিল।’’

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মানসরঞ্জন দাস আবার ওই ক্লাবের সেক্রেটারি। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের পুলের জল নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। মাঝেমধ্যে জল ফেলে দিয়ে নতুন জল ভরা হয়। জলে ক্লোরিনও দেওয়া হয়। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।’’ এ বিষয়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘শুধু লেকটাউন সুইমিং পুলই নয়, এই পুর এলাকার সব ক’টি সুইমিং পুলেই অভিযান চালিয়ে দেখা হবে, সেখানে জলের মান কেমন এবং মশার লার্ভা রয়েছে কি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Swimming pool Lake Town লেক টাউন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE