হাসপাতাল চালাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র প্রয়োজন। সেই ছাড়পত্র না থাকলে শাস্তির বিধানও রয়েছে আইনে। কিন্তু রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নথি বলছে, এসএসকেএম, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো সামনের সারির সরকারি হাসপাতালগুলি চলছে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই! যা নিয়ে অনেকেই বলছেন, নিয়ম না মানলে যদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শাস্তি হয়, তা হলে নিয়মভঙ্গের অভিযোগে কেন সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
এই গাফিলতি নিয়ে ইতিমধ্যেই ওই চারটি মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠি গিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছেও।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবেশের উপরে প্রভাব রয়েছে এমন কোনও প্রতিষ্ঠান চালাতে পরিবেশের ছাড়পত্র (কনসেন্ট টু অপারেট) প্রয়োজন। সম্প্রতি চিকিৎসা বর্জ্য থেকে ছড়ানো দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় নামে কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবী।
সেই মামলায় আদালতে নথি পেশ করে পর্ষদ জানিয়েছে, চিকিৎসা বর্জ্য সংক্রান্ত নিয়ম তো ঠিক মতো মানা হয়ই না, তার উপরে ২০১২ সালে চারটি সরকারি হাসপাতালের ছাড়পত্রের মেয়াদ ফুরোলেও তা পুনর্নবীকরণ করা হয়নি।
তা হলে এত দিন পর্ষদ কি ঘুমিয়ে ছিল?
সরাসরি ওই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে পর্ষদের এক কর্তার বক্তব্য, ওদের বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। কিন্তু সরকারি হাসপাতাল তো দুম করে বন্ধ করে দেওয়া যায় না। যদিও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সরকারি হাসপাতাল বন্ধ করা যায় না ঠিকই। কিন্তু পরিবেশ আইনে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায়। সেই আইনে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে।’’
সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে হাত গুটিয়ে থাকলেও বেশ কিছু দিন আগে এমন গাফিলতির জন্য কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল পর্ষদ। এর মধ্যে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে কয়েক দিনের জন্য বন্ধও করে দেওয়া হয়। সব নিয়ম মানার পরে ফের চালু হয়েছে সেই হাসপাতাল।
সরকারি হাসপাতালের গাফিলতি নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীকে ফোন করা হলে তার জবাব মেলেনি। উত্তরও আসেনি এসএমএসেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy