বেহাল: এমন ভাবেই চলে কেনাবেচা। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে একাধিক জায়গায়। কোথাও বেরিয়ে পড়েছে লোহার রড। আবার অনেক জায়গায় ছাদের চাঙড় ভেঙে
ঝুলছে। অন্য দিকের টিনের ছাউনি এখনও ভাঙাচোরা। বর্ষা এলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। তারই মধ্যে কোথাও ঝুলছে বিদ্যুতের তার। এ রকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে জীবন হাতে করেই কেনাকাটি করে চলেছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারাও প্রাণ হাতে নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনই ছবি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের উপরে সাদার্ন অ্যাভিনিউ বাজারের।
অভিযোগ, এ রকম ভয়াবহ অবস্থা সত্ত্বেও পুরসভা বা স্থানীয় কাউন্সিলর কেউই বাজারের সংস্কার করতে পারছেন না। বিপাকে পড়ে অনেক ক্রেতাই এখন বাজারটি পুরসভার অধিগ্রহণ করা উচিত বলে মনে করছেন। কিন্তু বেসরকারি মালিকানাধীন বাজারটির সংস্কার পুরসভা স্বেচ্ছায় করতে পারে না বলেই মত পুর কর্তৃপক্ষের। যদিও সাদার্ন অ্যাভিনিউ বাজারের উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক রাজা বক্সি জানাচ্ছেন, বাজারের বিষয়ে মালিকপক্ষকে অনেক বার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা সকলে মিলে চাঁদা তুলছেন। তাঁরাই গত দু’বছর ধরে ধাপে ধাপে বাজারের সংস্কার শুরু করছেন। যদিও সেই সংস্কারের কাজ খুব বেশি হয়নি বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলর মালা রায়। তিনি বলেন, ‘‘কিছু টিন আর চাঙড় ভেঙে একেবার ঝুলছিল। সেগুলোই খালি মেরামত করা হয়েছে। আর বাকি কাজ হয়নি। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘আমার ভয় কোনও দিন বড় কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’’
সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের উপরে প্রায় তিন বিঘার জমি জুড়ে ১৯৩৬ সালে তৈরি এই বাজারের বাইরে রয়েছে দোতলা ভবনটি। ভিতরের ফাঁকা চত্বরে টিনের ছাউনি ঘেরা বাজার। ৭৫ বছরের পুরনো এই বাজারে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে প্রায় তিনশোর বেশি দোকানদার রয়েছেন। বাজারের সামনের দিকের অংশের দোতলায় রয়েছে সাদার্ন অ্যাভিনিউ ডাকঘর। সেখানকারও পরিস্থিতিও বেশ ভয়ঙ্কর। একই ভাবে সেখানেও বেশির ভাগ জায়গার পলেস্তরা খসে গিয়েছে। ভিতরের বাজারের একটি অংশে দোকানদারেরা প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙিয়ে বসেন। বাকি অংশের টিনের ছাউনিও প্রায় ভেঙে গিয়েছে। এখনও সেগুলির সংস্কার করে উঠতে পারেনি বাজার সমিতি।
সমিতির তরফে আরও জানা গিয়েছে, বাজারের সংস্কারের জন্য ১৯৯৭ সালে মালিকপক্ষের কয়েক জন এক ডেভেলপারের হাতে তুলে দেন। তখনও বলা হয়েছিল ধাপে ধাপে বাজার সংস্কার করবেন তাঁরা। তেইশ বছর কেটে গেলেও কিছু হয়নি। সংস্কারের কাজ হবে, এমন আশ্বাসও আর মেলে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy