থোড়াই কেয়ার: অনুষ্ঠান উপলক্ষে পরীক্ষার মরসুমেও এ ভাবে বাঁধা রয়েছে চোঙা। বুধবার, কেষ্টপুরে। নিজস্ব চিত্র
পরীক্ষার সময়ে মাইক বাজানোয় সংযত হতে বলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক বলছেন, ‘‘মাইক বাজানোর অনুমতি নিলেও কখনওই চোঙা বাজানো যায় না।’’ কেষ্টপুরে অবশ্য সে সব কেউ শুনছে না। এমনকী, নিয়ম মানা হচ্ছে না ‘সরকারি’ অনুষ্ঠানেও।
বুধবার কেষ্টপুর খালপাড়ে সেচ দফতরের জমিতে ফুল, ফল, আনাজ চাষের মাধ্যমে এলাকার সৌন্দর্যায়ন, সমরপল্লিতে ন্যায্য মূল্যে আনাজ বিক্রির কেন্দ্র ও কেষ্টপুর-সল্টলেকের মধ্যে গাড়ি চলাচলের জন্য সেতু নির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। সমরপল্লির অনুষ্ঠান মঞ্চকে ঘিরে ঘোষপাড়া কালীবাড়ি, সমরপল্লি, খ্রিস্টানপাড়া, সিদ্ধার্থনগর, সাত নম্বর খেয়াঘাট, বৈশাখী-সহ কেষ্টপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বাতিস্তম্ভে বাঁধা হয়েছিল চোঙা। আইএসসি, আইসিএসই-র পরে সিবিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষাও শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক শুরু হতে আর সাত দিনও বাকি নেই। এই পরিস্থিতিতে বিকেল সাড়ে চারটে থেকে মাইকে গলা শান দিতে থাকেন ঘোষক। রাতে অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত তাতে ছেদ পড়েনি।
গত কয়েক দিনে বিমানবন্দর থেকে বারাসত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১৭টি চোঙা বাজেয়াপ্ত করেছে ব্যারাকপুর মহকুমাশাসকের দফতর। কেষ্টপুরের সমরপল্লির বাসিন্দা এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অভিভাবকের প্রশ্ন, ‘‘এ ধরনের অভিযান কেষ্টপুরে কেন হয় না?’’
কেষ্টপুর এলাকাটি যাঁর অধীন, বারাসতের সেই মহকুমাশাসক পীযূষকান্তি দাস বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ সাত নম্বর খেয়াঘাটে একটি আবাসনের বাসিন্দা তথা সিবিএসই বোর্ডের এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘‘প্রকল্পগুলি ভাল। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের কথাটাও তো ভাবতে হবে। এ ভাবে খোলা জায়গায় মাইক বাজালে কেউ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে? এখানে বাতিস্তম্ভ থেকে মাইক তো নামতেই চায় না!’’
এ দিন উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পগুলির মধ্যে সেতু নির্মাণ সেচ দফতরের সঙ্গে সম্পর্কিত। খালের দু’ধারের যে জমিতে আনাজ বিক্রয় কেন্দ্র এবং অব্যবহৃত জমিতে সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে, সে-ও সেচ দফতরের। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বোধনী মঞ্চে হাজির ছিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত-সহ পুর কমিশনার, মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যানেরা। ছিলেন রাজারহাট-গোপালপুরের স্থানীয় বিধায়ক তথা কারিগরি মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুও।
মাইক প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেয়র সব্যসাচীবাবুর বক্তব্য, ‘‘অনুষ্ঠানটি সেচ দফতরের। স্থানীয় বিধায়কের তত্ত্বাবধানে সেটি হয়েছে। পুর নিগমের অনুষ্ঠান ছিল না।’’ আর স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এরও জবাব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy