নির্দেশিকা: পুকুর পাড়ে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
পুকুর বা জলাশয়। তার এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে আবর্জনা। পরিষ্কারের জন্য চিঠি পাঠানো হলেও ভ্রুক্ষেপ নেই মালিকের! এ সবের মধ্যেই বাড়ছে বর্ষায় মশাবাহিত রোগের আতঙ্ক। এ বার তাই পুর এলাকার পুকুরগুলো আবর্জনামুক্ত করতে আইনি পথে হাঁটার হুশিয়ারি দিল রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা। পুকুরপাড়ে বোর্ড লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট মালিককে পুকুর পরিষ্কার করার কড়া বার্তা দিয়েছে পুরসভা।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায় মোট ৩৫টি ওয়ার্ড। পুর এলাকায় সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে ২,২৬৭টি পুকুর রয়েছে। সব পুকুরপাড়েই লাগানো হয়েছে বোর্ড। তাতে লেখা, ‘এই পুকুরের মালিক/শরিকগণকে এক মাসের মধ্যে পুকুর পরিষ্কার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্যথায় আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদেশানুসারে-রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা’।
দিন কুড়ি আগে পুর এলাকার সব পুকুরপাড়ে লাগানো হয়েছে এই নির্দেশিকা। আবর্জনা না ফেলার জন্য বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সরকারি পুকুরের সংস্কারের দায়িত্ব পুরসভার। ইতিমধ্যে তা হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুর পরিষ্কার করা নিয়ে আইনি ঝামেলায় পড়তে হয় পুরসভাকে। তেমন অতীত অভিজ্ঞতাও রয়েছে বলে দাবি। এক কর্তার কথায়, ‘‘নথি ঘেঁটে পুকুরের মালিককে পরিষ্কারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হল। কিছু দিন পরে পাল্টা আইনি চিঠি পাঠালেন পুকুরের এক শরিক। অনেকে আবার পরিষ্কার করা নিয়ে অনীহা দেখান।’’ তাঁর মতে, ব্যক্তিগত পুকুর পুরসভা পরিষ্কার করতে গেলে অন্য কাজ ফেলে সে সবই করতে হবে পুরসভাকে।
জনসমক্ষে এমন ফ্লেক্সের ফলে মালিকদের উপরে যেমন ‘চাপ’ বাড়ল, তেমন আইনি হুঁশিয়ারির কারণে পুকুর পরিষ্কারের কাজ গতিও পাবে বলে মত পুর কর্তৃপক্ষের। পুর প্রধান পল্লব দাসের বক্তব্য, ‘‘পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ক্যালেন্ডার তৈরি করেছেন। কাজও শুরু হয়েছে। এক সময়ে এডিস ইজিপ্টাই মশা পরিষ্কার জলে ডিম পাড়ত। তবে এখন সেই প্রবণতা বদলাচ্ছে। ফলে পুকুর পরিষ্কার আবশ্যিক। বোর্ড দিয়ে কড়া নির্দেশ জারি করায়, কিছুটা হলেও নড়েচ়ড়ে বসবে।’’ ইতিমধ্যে সংস্কার শুরু হয়েছে বলে দাবি পুর প্রধানের।
আইনি পথে কী ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা অবশ্য এখনও স্থির হয়নি। যাঁরা পুকুর পরিষ্কার করবেন না, তাঁদের প্রথমে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি ফের মনে করাবেন পুর কর্তৃপক্ষ। তার পরে সংশ্লিষ্ট মালিকের কাছ থেকে যে জবাব আসবে, তা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেবেন পুর কর্তৃপক্ষ। এর পরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন। রাজ্য সরকার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বলে দাবি পল্লববাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy