Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্পিড ব্রেকার বসাতে অনুমতি চাই প্রশাসনের

গড়িয়াহাট অঞ্চলের কর্নফিল্ড রোড। পুরসভার তৈরি পার্কের সামনে পরপর তিনটি স্পিড ব্রেকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাস কলকাতায় গরুর গাড়ি চড়ার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হলে এই রাস্তা দিয়ে গেলেই হল।

এখন যত্রতত্র বসানো হচ্ছে প্লাস্টিকের এমন স্পিড ব্রেকারও। কমছে পথের গতি। ফাইল চিত্র

এখন যত্রতত্র বসানো হচ্ছে প্লাস্টিকের এমন স্পিড ব্রেকারও। কমছে পথের গতি। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:৩৪
Share: Save:

উত্তর শহরতলির যশোর রোডে বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশন থেকে নাগেরবাজার মোড়। মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা। তারই মধ্যে অন্তত আটটি জায়গায় বসানো হয়েছে স্পিড ব্রেকার।

গড়িয়াহাট অঞ্চলের কর্নফিল্ড রোড। পুরসভার তৈরি পার্কের সামনে পরপর তিনটি স্পিড ব্রেকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাস কলকাতায় গরুর গাড়ি চড়ার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হলে এই রাস্তা দিয়ে গেলেই হল।

শহর কিংবা হাইওয়েতে যত্রতত্র স্পিড ব্রেকার বসানোর ব্যাপারে এ বার কড়া হচ্ছে নবান্ন। পূর্তসচিব অর্ণব রায় এক নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে আর রাজ্যের যে কোনও রাস্তায় স্পিড ব্রেকার বসানো যাবে না। যদি একান্তই বসাতে হয়, তা হলে নবান্নের পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার-ইন-চিফের অনুমতি নিতে হবে। স্পিড ব্রেকার যেখানেই বসুক, তার হিসেব রাখবে নবান্ন। এই নির্দেশ অত্যন্ত কঠোর ভাবে পালন করতে হবে বলে জেলাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন পূর্তসচিব।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু কেন হঠাৎ সরকারি তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হল?

নবান্নের এক পূর্ত কর্তার ব্যাখ্যা, রাজ্যে রাস্তা তৈরি হয় ‘ইন্ডিয়ান রোডস কংগ্রেস’-এ তৈরি হওয়া গাইডলাইন মেনে। সেই নীতিই সারা দেশে মেনে চলা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সেই নীতি মেনে রাস্তা তৈরি হলেও এখানে স্পিড ব্রেকার বসানোর প্রবণতা খুব বেশি। সারা দেশে এ নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।

এক পূর্ত কর্তা জানাচ্ছেন, উন্নত মানের রাস্তা তৈরি করার অর্থ গাড়ির গতি বাড়ানো। কিন্তু তা করার পরে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় মানুষের দাবিতে পুরসভা, পঞ্চায়েত, পুলিশ যেখানে সেখানে স্পিড ব্রেকার বসিয়ে দেয়। কোথাও কোথাও তো বাসস্টপ আদায় করার জন্য বড় মাপের স্পিড ব্রেকার বসিয়ে দেন গ্রামবাসীরাই। রাস্তায় কখনও কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার পরিবর্তে স্পিড ব্রেকার বসিয়েই চটজলদি সমাধান খোঁজেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা। সেই কারণেই নিয়ন্ত্রণ আরোপ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানান পূর্ত কর্তাদের একাংশ।

পূর্তসচিব জানান, যেখানে সেখানে স্পিড ব্রেকার বসানোর প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। কারণ, যেখানেই তা বসানো হচ্ছে, রাস্তা দ্রুত খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ‘ইন্ডিয়ান রোডস কংগ্রেস’-এর নীতি মানলে তা করাও যায় না। তাই তাদের নির্দেশিকা বাস্তবায়িত করতেই স্পিড ব্রেকার বসাতে হলে নবান্নের অনুমতি নিতে হবে।

স্পিড ব্রেকার নিয়ন্ত্রিত হলে রাস্তায় গাড়ির গতি বাড়বে। মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে। তবে কোথাও কোনও রাস্তায় পথ নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা হবে না। যদি পথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়, তা-ও ‘ইন্ডিয়ান রোডস কংগ্রেস’-এর নির্দেশিকায় বলে দেওয়া পথেই করতে হবে। রাস্তার মাঝে স্পিড ব্রেকার বসিয়ে নয়।

পূর্তসচিব গত ১৯ মার্চ এই নির্দেশ দিলেও এত দিন যে সব রাস্তায় স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে, সেগুলির কী হবে, তা নিয়ে কিছু বলেননি। তাই যশোর রোড বা কর্নফিল্ড রোডের যাত্রীদের স্পিড ব্রেকারের ঝাঁকুনি থেকে এখনই মুক্তি নেই। তবে ভরসা, আপাতত নতুন কোনও স্পিড ব্রেকার আর বসবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Roads Congress Speed Breaker KMC Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE