Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এ বার মোবাইলেই

লালবাজার সূত্রের খবর, বাড়ি বসে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট মোবাইলে পাওয়ার এই পদ্ধতি চালু করার পরে প্রচুর সাড়া মিলেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুরবেক বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা বা খুন। অপমৃত্যুর শিকার যাঁরা, তাঁদের বাড়ির লোক যাতে মোবাইল ফোনেই ময়না-তদন্ত রিপোর্ট পেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা কলকাতা পুলিশ সপ্তাহ তিনেক আগে চালু করেছে। দূরবর্তী জেলা বা ভিন্‌ রাজ্যের যে সব বাসিন্দা অপমৃত্যুর শিকার, এ বার এই ব্যবস্থায় তাঁদের বাড়ির লোকজনকে কতটা দ্রুত সুবিধে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করা কলকাতা পুলিশের লক্ষ্য।

লালবাজার সূত্রের খবর, বাড়ি বসে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট মোবাইলে পাওয়ার এই পদ্ধতি চালু করার পরে প্রচুর সাড়া মিলেছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে এই সাড়া দেখেই উৎসাহিত গোয়েন্দা বিভাগ একে আরও মাজাঘষা করে সুচারু রূপ দিতে চাইছে।

গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘শহরে অপমৃত্যু শিকার যাঁরা, দেখা যাচ্ছে তাঁদের মধ্যে ৩০ শতাংশের বাড়ি কলকাতার বাইরে। অনেকেই আছেন দূরবর্তী জেলার। তাঁদের বাড়ির লোক যাতে সুবিধে পান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’’ গোয়েন্দাপ্রধান জানান, দূর-দূরান্ত থেকে বারবার কলকাতায় আসার ঝক্কি আছে। একই সঙ্গে ব্যয়সাপেক্ষ ও সময়সাপেক্ষ। তাঁদের স্বস্তি দেওয়াই লক্ষ্য। গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রের খবর, এ বার এমন সফ্‌টঅয়্যার এই ব্যবস্থায় আনা যেতে পারে, যাতে দূরবর্তী জেলার মানুষেরা দ্রুত ময়না-তদন্ত রিপোর্ট পান।

অপমৃত্যুর শিকার যিনি, তাঁর দেহের ময়না-তদন্ত আবশ্যক। কিন্তু বিমার টাকা পেতে, সম্পত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে কিংবা মামলা-মোকদ্দমায় জরুরি ময়না-তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা। তা ছাড়া, মৃতের বাড়ির লোক মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন ওই নথি দেখে।

এত দিন কলকাতার পাঁচটি মর্গে শহরের সব ক’টি থানার চাপ সমান ভাবে বণ্টন করা ছিল না। কোনও মর্গের চাপ ছিল খুব বেশি, কোনওটার খুব কম। সম্প্রতি পাঁচটি মর্গের মধ্যে থানাগুলির চাপ মোটামুটি সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট দ্রুত মিলছে ঠিকই। তবে বাড়ির লোককে প্রথমে লালবাজারে আবেদন, তার পরে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট এসেছে কি না, থানায় গিয়ে তার খোঁজ বারবার করতে হত। এটা এক রকম হেনস্থার পর্যায় গিয়েছে বলে উপলব্ধি করে কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে মোবাইলে বসে ময়না-তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

নতুন এই ব্যবস্থায় ময়না-তদন্তের পরে মৃতদেহ আনতে যখন বাড়ির লোক থানায় নিজের পরিচয় দিয়ে আবেদন করবেন, সেই সময়ে তিনি দাখিল করবেন নিজের ফোন নম্বর, ঠিকানা। যে মর্গে ময়না-তদন্ত হয়েছে, সেখানকার পুলিশদের কাছে থানা মারফত পৌঁছবে মৃত বা নিহতের বাড়ির লোকের ফোন নম্বর।

ময়না-তদন্ত রিপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে সেই মোবাইল নম্বরে বার্তা যাবে। সেই বার্তায় থাকবে একটি লিঙ্ক, যাতে ক্লিক করলে কলকাতা পুলিশের নিজস্ব অনলাইন ব্যবস্থায় তার আগেই আপলোড হওয়া রিপোর্টটি খুলে যাবে। এমনকী, সেটা যে জাল নথি নয়, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে কিউ আর কোড-ও থাকছে। অ্যানড্রয়েড ফোন যাঁদের নেই, তাঁরা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে লিঙ্কটি খুলে রিপোর্টের প্রিন্ট নিতে পারেন। যাঁরা এই পথেও যেতে অপারগ, তাঁদের জন্য পুরনো ব্যবস্থা তো থাকছেই।

কয়েক মাসের মধ্যে এই ব্যবস্থা আরও ঝকঝকে ও দ্রুত করবে কলকাতা পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE