রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে দাদু-দিদিমার ঘরের দরজায় ধাক্কা দিয়েছিলেন নাতনি। দরজা খুলে যেতে তরুণী দেখেন, মেঝেতে শুয়ে দু’জনে। ডাকাডাকি করে টের পেলেন, কারও দেহেই প্রাণ নেই।
ঘটনাস্থল জোড়াবাগান থানার নিমু গোস্বামী লেন। বৃহস্পতিবার সুস্মিতা কড়েয়া নামে ওই তরুণীর কাছে খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। মৃত দম্পতির নাম সুনীল সাউ (৮৭) ও শেফালি সাউ (৭৭)। দেহের পাশ থেকে মিলেছে সুইসাইড নোট, বিষের শিশি ও গ্লাস। যা দেখে পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যা। পুলিশের দাবি, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও তেমন ইঙ্গিত মিলেছে।
পুলিশ জানায়, তিনতলা বাড়ির একতলায় নাতনি সুস্মিতাকে নিয়ে থাকতেন দম্পতি। দোতলায় থাকেন সুস্মিতার মা রিনা ও তাঁর ছেলে সায়ন্তন। স্থানীয়দের দাবি, একমাত্র ছেলে সঞ্জয় সাউ ২০০৮ সালে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সুস্মিতা ছাড়া পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না দম্পতির।
পুলিশকে সুস্মিতা জানান, ওই সন্ধ্যায় দাদু-দিদিমাকে রেখে পিকনিক গার্ডেনে শ্বশুরবাড়ি যান তিনি। ফিরে দেখেন, সায়ন্তন ফেরেননি। দাদু-দিদিমার ঘর বন্ধ। ঘরের দরজায় ধাক্কা দিতেই ছিটকিনি খুলে যায়। ঢুকে দেখেন, চাদর ঢেকে শুয়ে আছেন দাদু-দিদিমা। সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন সুস্মিতা। খবর যায় জোড়াবাগান থানায়।
পুলিশ জানায়, বৃদ্ধ দম্পতিকে আর জি করে মৃত ঘোষণা করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, সুইসাইড নোটে লেখা, স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেছেন ওই দম্পতি। রয়েছে তাঁদের আর্থিক দুরবস্থা ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথাও।
স্থানীয় বাসিন্দা অরূপ বসাক জানান, শারীরিক ভাবে শয্যাশায়ী ছিলেন না ওই দম্পতি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেও সুনীলবাবুকে বাজারে দেখা গিয়েছে। প্রতিবেশীদের দাবি, নির্ঝঞ্ঝাট মানুষ বলেই পরিচিত ওই দম্পতির কারও সঙ্গেই বিশেষ মেলামেশা ছিল না। তবে পুত্রবধূ রিনার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই তাঁদের বিবাদ হতো বলে স্থানীয় বাসিন্দা জানান। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy