Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেরে ফ্ল্যাট থেকে বার করে দিয়েছে ছেলে-বৌমা! থানায় হাজির বৃদ্ধ দম্পতি

পুলিশ অবশ্য এখনও পর্যন্ত ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে তাঁদের নিজেদের ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে পারেনি। গ্রেফতার হননি ছেলে-বৌমাও। পুলিশে‌র দাবি, এ রকম ঘটনার সংখ্যা প্রচুর। তদন্ত শুরু হয়েছে। তেমন হলে পুলিশ নিজে গিয়ে ওই দম্পতিকে তাঁদের ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়ে আসবে।

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন দিলীপ ও অণিমা ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন দিলীপ ও অণিমা ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন বৃদ্ধ দম্পতি। বৃহস্পতিবার কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। ওই দম্পতির অভিযোগ, তাঁদের বড় ছেলে ও বৌমা নিজেদের ফ্ল্যাট তালাবন্ধ করে রেখে তাঁদের ফ্ল্যাটে এসে উঠেছেন এবং এমন অত্যাচার করছেন যে, তাঁরা ভয়ে নিজেদের আস্তানা ছেড়ে ছোট ছেলের ভাড়া বাড়িতে এসে রয়েছেন।

পুলিশ অবশ্য এখনও পর্যন্ত ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে তাঁদের নিজেদের ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে পারেনি। গ্রেফতার হননি ছেলে-বৌমাও। পুলিশে‌র দাবি, এ রকম ঘটনার সংখ্যা প্রচুর। তদন্ত শুরু হয়েছে। তেমন হলে পুলিশ নিজে গিয়ে ওই দম্পতিকে তাঁদের ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়ে আসবে।

কী অভিযোগ?

কসবার ১৪৪ নম্বর বোসপুকুর প্রান্তিকপল্লির বাসিন্দা দিলীপ ভট্টাচার্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে রাজ্যের কারা দফতরে কাজ করে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে কিনেছিলেন দু’কামরার ফ্ল্যাট। সেখানেই স্ত্রী অণিমা এবং দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি। কিন্তু গোলমাল শুরু হয় ন’বছর আগে বড় ছেলের বিয়ের পরে। অভিযোগ, বৌমা এসেই আলাদা থাকতে চাওয়ায় অশান্তি এড়াতে তাঁদের পিকনিক গার্ডেনে একটি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছিলেন দিলীপবাবু। তাঁর অভিযোগ, আলাদা ফ্ল্যাট করে দিলেও সেখান থেকে বড় বৌমা নানা সময়ে নানা বায়না নিয়ে হাজির হতেন। দিলীপবাবুর দাবি, ছেলে অসুস্থ হয়ে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরে পেনশনের টাকায় তাঁর সংসারও চালাতেন দিলীপবাবুই। পাশাপাশি, দামি টিভি, গ্যাসের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে জলের ফিল্টার— অনেক কিছুই কিনে দিয়েছেন তিনি। দিলীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘বৌমার দাবি মেনে সবই কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু মাস ছয়েক আগে হঠাৎ এক দিন এই ফ্ল্যাটে এসে জোর করে ঢুকে ওরা জানায়, এখানেই থাকবে।’’

আরও পড়ুন: নারকেলডাঙায় দুষ্কৃতী হামলা, গুলি-বোমায় আহত দুই

অভিযোগ, এর পর থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। অণিমাদেবী বলেন, ‘‘আমাদের ফ্ল্যাটে দু’টি ঘর। বড়টায় আমি আর আমার স্বামী থাকতাম। ছোট ঘরে থাকত ছোট ছেলে। কিন্তু ওরা এসেই ছোট ছেলেকে বদনাম দিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বার করে দিল।’’ আরও অভিযোগ, ছোট ছেলে বেরিয়ে গেলে বড় ঘরটি দখল করেন ছেলে-বৌমা। তাঁদের ঠাঁই হয় ছোট ছেলের ছোট্ট ঘরটিতে। অভিযোগ, তার পরে বুধবার মানসিক আর শারীরিক অত্যাচার চরমে ওঠে। দিলীপবাবুর দাবি, ওই দিন বৌমা টাকা চাইতে এসে প্রথমে তাঁকে যাচ্ছেতাই ভাবে অপমান করেন। তার পরে চলে মারধর। ওই ঘটনার পরে বৃদ্ধ দম্পতি রাতে আর ঘর থেকে বেরোননি। জোটেনি রাতের খাবারও। সকাল হতেই তাঁরা দৌড়ন কসবা থানায়। সেখান থেকে ছোট ছেলেকে ফোন করেন। তার পরে চলে যান তাঁর ভাড়া বাড়িতে।

আরও পড়ুন: কনস্টেবলের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে পালাল বন্দি

অভিযুক্ত বড় ছেলে ও বৌমার প্রতিক্রিয়া চাইতে ফোন করলে তাঁরা কেউ ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মেসেজেরও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ওই বৃদ্ধ দম্পতির এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই দম্পতির উপরে নির্যাতন চলত।

(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

FIR Police Daughter-in-law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE