Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘খেতে দেয় না’ ছেলে ও বৌমা, থানায় মা

অনিতাদেবী সোনারপুর থানা এলাকার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা। আশি বছরের ওই বৃদ্ধার দুই ছেলে। বড় ছেলে সুশীল গয়না তৈরির দোকানে কাজ করে। ছোট ছেলে সন্টুর হার্ডওয়্যারের ব্যবসা রয়েছে।

অনিতা ঘোষ

অনিতা ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৯
Share: Save:

সোনারপুর থানায় এসে এক পাশে দীর্ঘ ক্ষণ বসেছিলেন এক বৃদ্ধা।
সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ কর্মীরাও তখন নানা কাজে ব্যস্ত। বহু ক্ষণ বৃদ্ধাকে বসে থাকতে দেখে এক অফিসার এগিয়ে এসে জানতে চান, ‘‘কী সমস্যা’’। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ছেলে আর বৌমা আমার উপরে খুব অত্যাচার করছে। বাড়ি থেকে যখন তখন বার করে দিচ্ছে। খেতে দিচ্ছে না।’’ ওই অফিসার তাঁকে ছেলে বৌমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দিলে অনিতা ঘোষ নামে ওই বৃদ্ধা বলে ওঠেন, ‘‘কী অভিযোগ করব। আমারই তো সন্তান। আপনারা একটু ভয় দেখিয়ে দিন না। যাতে আমার উপরে আর অত্যাচার না করে।’’

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অনিতাদেবী সোনারপুর থানা এলাকার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা। আশি বছরের ওই বৃদ্ধার দুই ছেলে। বড় ছেলে সুশীল গয়না তৈরির দোকানে কাজ করে। ছোট ছেলে সন্টুর হার্ডওয়্যারের ব্যবসা রয়েছে। বৃদ্ধার অভিযোগ মূলত ছোট ছেলে সন্টু ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণার বিরুদ্ধেই। ছোট ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সম্পত্তি
লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও ওই বৃদ্ধা অভিযোগ জানান। পুলিশ জানায়, প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে বৃদ্ধার অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।

পুলিশ জানায়, রাতেই অনিতাদেবীকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোট ছেলের সঙ্গেও কথা বলা হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ছোট ছেলের কাছেই থাকেন অনিতাদেবী। আগেও এক বার ছেলেদের বিরুদ্ধে আদালতে খোরপোষের মামলা করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে সুশীল মাকে মাসিক ২৫০ টাকা দেওয়া শুরু করে। কয়েক জন আত্মীয়ও তাঁকে আর্থিক সাহায্য করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন অনিতাদেবী।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাতেই অনিতাদেবীকে বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। তাঁর ছেলে-বৌমাকেও সর্তক করে দেওয়া হয়। বারুইপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ অনিতাদেবীর ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ রাখবে। ফের যদি ছেলে-বৌমা ওই বৃদ্ধার উপরে অত্যাচার করেন তা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মঙ্গলবার অনিতাদেবী বলেন, ‘‘ছোট বৌমা শীতের রাতে বাড়ির বাইরে বার করে দেয়। ছেলেও প্রতিবাদ করে না। ছেলেকে বৌমার অত্যাচারের কথা জানিয়েও লাভ হয়নি। তার পরেই থানায় যাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Domestic violence Sonarpur সোনারপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE