সঞ্জয় শিকদার
গভীর রাতে আগুন লাগিয়ে একটি পরিবারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তবে প্রতিবেশীদের তৎপরতায় বেঁচে গিয়েছেন ওই পরিবারের ৯ জন সদস্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছে দেড় বছরের যমজ শিশুকন্যাও। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নরেন্দ্রপুর থানার নতুন দিয়ারায়। মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় শিকদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, ব্যক্তিগত আক্রোশেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে সে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাতে জানলার পাশে আচমকা চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল সুরেন্দ্র সাহা নামে এক যুবকের। বাড়ির বাইরে এসে তিনি দেখেন, প্রতিবেশী চাঁদ সিংহের বাড়ির একতলা দাউদাউ করে জ্বলছে। সুরেন্দ্রই আশপাশের লোকজনকে ডাকেন। তাঁরা সকলে মিলে আগুন নেভান। চাঁদের পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার একটু পরেই দেখা যায়, কিছুটা দূরে প্রকাশ সিংহ নামে আর এক জনের বাড়িতে মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই আগুনও নেভান পড়শিরা। তখনই তাঁরা হাতে দস্তানা পরা ও কেরোসিনের বোতল ধরা অবস্থায় এক ব্যক্তিকে ছুটে পালাতে দেখেন। ধাওয়া করেও তাকে ধরা যায়নি। পরে নরেন্দ্রপুর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ গড়িয়া স্টেশন এলাকা থেকে সঞ্জয়কে ধরে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, বছর দুয়েক আগে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে ওই যুবকের। তার স্ত্রী এলাকারই আর এক জনকে বিয়ে করেন। এর পরেই বাড়ি বিক্রি করে চলে গিয়েছিল সঞ্জয়। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় সে অভিযোগ করেছে, তার বিবাহ-বিচ্ছেদের পিছনে প্রতিবেশীদের ইন্ধন ছিল। সে কারণেই কয়েক জনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে তাঁদের প্রাণে মারার পরিকল্পনা করেছিল সে।
সোমবার চাঁদ বলেন, ‘‘রাতে আশপাশের লোকদের চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। জানলা খুলে দেখি, বাড়ির একতলা জ্বলছে। কোনও রকমে নেমে আসি। তত ক্ষণে প্রতিবেশীরা নীচের লোহার দরজা ভেঙে ফেলেছেন। আমি, আমার স্ত্রী, দেড় বছরের দুই বাচ্চা, বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে সবাই কোনও রকমে বেরিয়ে আসি। প্রতিবেশীরা তৎপর না হলে পুড়েই মারা যেতাম।’’ একই সঙ্গে বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সঞ্জয়ের পারিবারিক বিষয়ে তাঁরা কোনও দিনই জড়িত ছিলেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, নরেন্দ্রপুর ছাড়ার পরে উত্তর ২৪ পরগনা এলাকায় থাকত সঞ্জয়। জেরায় সে আরও জানিয়েছে, পড়শিদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে সোমবার ভোরে শিয়ালদহের প্রথম ট্রেন ধরে পালানোর ছক কষেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy