প্রতীকী ছবি।
রোগী নিয়ে এসএসকেএমের জরুরি বিভাগে ঢুকেই কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছে চলে যায় যুবক। ধোপদুরস্ত পোশাক, গলায় সোনার চেন পরিহিত বছর বত্রিশের ওই যুবকের কথাবার্তা শুনে কারও মনে হয়নি সে মিথ্যা বলছে। পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে সঙ্গে আনা রোগীকে প্রায় ভর্তিও করে ফেলেছিল ওই যুবক। তবে শেষ রক্ষা হল না। এসএসকেএম ফাঁড়ির পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে সে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ জরুরি বিভাগে যায় মীর মেহেদি হাসান নাম ওই যুবক। সঙ্গে এক পুরুষ রোগী। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের কাছে সে দাবি করে, মন্ত্রীর সুপারিশে ওই রোগীকে ভর্তি করানোর জন্য সে এসেছে। দ্রুত শয্যা না পেলে মন্ত্রীর ফোন আসার হুমকিও সে দেয় বলে অভিযোগ। চৌখশ কথায় সহজেই কর্তব্যরত চিকিৎসকদের আস্থা অর্জন করে ফেলে মীর। কিন্তু ভর্তির কাগজ নিয়ে জরুরি বিভাগ ছাড়ার আগে তাকে চেপে ধরেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। মন্ত্রীর সুপারিশের কোনও চিঠি দেখতে চাওয়া হয় তার কাছে। সে কোনও কাগজ দেখাতে না পারলে মন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন পুলিশকর্মীরা। মন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই নামে কাউকে এসএসকেএমে পাঠানো হয়নি। এর পরে জিজ্ঞাসাবাদে যুবকের একের পর এক কীর্তির কথা জানতে পারে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এর আগেও ধৃত একই কায়দায় দু’বার রোগী ভর্তি করিয়েছে। একবার নিজেকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সহকারী বলে পরিচয় দিয়েছিল সে। জরুরি বিভাগে তার দাপট দেখে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের তখনই সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করার আগে ধীরে চলো নীতি নেয় ভবানীপুর থানার অন্তর্গত এসএসকেএম ফাঁড়ি।
পুলিশ সূত্রের খবর, মালদহের মানিকচকের বাসিন্দা মীরকে ২০১১ সালে প্রতারণার অভিযোগে ধরেছিল বৌবাজার থানা। চলতি বছরের জুনে চিৎপুর থানায় তার বিরুদ্ধে একটি চুরির অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এ দিন তল্লাশিতে মীরের কাছে ছ’টি এটিএম কার্ড, চারটি মোবাইল এবং নগদ পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতের সঙ্গে একটি গাড়িও ছিল। ছ’টি এটিএম কার্ডের একটিও ধৃতের নয়। তদন্তকারীদের অনুমান, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে সে টাকার বিনিময়ে রোগী ভর্তির কাজ করত। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের মোবাইল ঘেঁটে জানা গিয়েছে, পছন্দমতো জায়গায় বদলির লোভে একাধিক সরকারি আধিকারিকও মীরের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এসএসকেএমের সুপার তথা উপাধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘এ ধরনের প্রতারকদের ধরতে সব সময় চেষ্টা করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy