Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘কোনও দিন ঘুমের মধ্যেই কি পুড়ে মরতে হবে!’

তিন তলা বাড়িটা ভেঙে পড়েছিল গুলাবশার চোখের সামনেই। পরের দিন ছিল মাধ্যমিকের ভূগোল পরীক্ষা। মধ্যরাতে বই-খাতা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছিল পরীক্ষার্থী গুলাবশাকে। পরের দিন অবশ্য পরীক্ষা দিয়েছিল সে।

গুলাবশা নাজ

গুলাবশা নাজ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

রবিবার সকাল থেকেই পাড়ায় আগুন আতঙ্ক! তার জেরেই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী গুলাবশা নাজের মনে পড়ে যাচ্ছিল দেড় বছর আগের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। আতঙ্কে এ দিন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তেও যেতে পারেনি সে। বলছে, ‘‘বারবার আমাদের পাড়ায় আগুন লাগে। কোনও দিন ঘুমের মধ্যেই কি পুড়ে মরতে হবে!’’

শনিবার গভীর রাতে আগুন লাগে ক্যানিং স্ট্রিটের বাগড়ি মার্কেটে। ওই মার্কেটের পিছনের আমড়াতলা লেনে বাড়ি মহম্মদ জান উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী গুলাবশার। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেই গভীর রাতে গুলাবশার ঠিক পাশের বাড়িতে (৩, আমড়াতলা লেন) আগুন লেগেছিল। তিন তলা বাড়িটা ভেঙে পড়েছিল গুলাবশার চোখের সামনেই। পরের দিন ছিল মাধ্যমিকের ভূগোল পরীক্ষা। মধ্যরাতে বই-খাতা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছিল পরীক্ষার্থী গুলাবশাকে। পরের দিন অবশ্য পরীক্ষা দিয়েছিল সে।

এ বার বাণিজ্য বিভাগে তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা। জোরকদমে তার প্রস্তুতি চললেও এ দিন আর পড়তে যাওয়া হয়নি গুলাবশার। গুলাবশা বলে, ‘‘সকাল থেকেই পাড়ায় জটলা। বাবা খবর দিল, সব পুড়ে গিয়েছে। আমাদের পাশের বাড়ির মতোই অবস্থা। মনে পড়ছিল পরীক্ষার আগের রাতের কথা। কী করে যে পরীক্ষা দিয়েছিলাম, বলে বোঝানো যাবে না।’’ দেড় বছরেও পুড়ে যাওয়া পাশের বাড়িটি সংস্কার হয়নি। গুলাবশার ক্ষোভ, ‘‘আমাদের পাড়ায় বারবার আগুন লাগে। কেউ কিছুই করে না।’’ ওই ছাত্রীর বাবা আজহর জামান খান বলছেন, ‘‘আগুন লাগার পরের কয়েক দিনে সবাই খুব তৎপর হয়। তার পরে আবার যে কে সেই!’’

উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সিএস করতে চায় গুলাবশা। আর চায় পাড়ার পরিস্থিতি বদলাতে। গুলাবশা বলছে, ‘‘কাজের সঙ্গে পাড়ার পরিবেশ বদলাতে চাই। একটু ভাল ভাবে থাকতে চাই আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE