ছবি: পিটিআই।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ট্যাক্সি ধর্মঘটের ডাক দিল এআইটিইউসি অনুমোদিত ‘ট্যাক্সি অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’। বুধবার ওই সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, ধর্মঘট ছাড়াও ওই দিন পরিবহণ ভবন অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর আগে ট্যাক্সির ভাড়া বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে একাধিক বার প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সংগঠনের দাবি। তাদের অভিযোগ, ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারি স্তরে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত সেই আবেদন মানা হয়নি।
‘ট্যাক্সি অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’র নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব এ দিন বলেন, ‘‘করোনার এই সময়ে ডিজ়েলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছে। সরকারকে সমস্যার কথা জানিয়েও সুরাহা হয়নি। তাই আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।’’ নওলকিশোর জানান, ট্যাক্সির ন্যূনতম ভাড়া ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা এবং কিলোমিটার-পিছু ভাড়া ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২৫ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। প্রতি ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড অপেক্ষার জন্য ১ টাকা ৩০ পয়সার বদলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নেওয়ার দাবিও রয়েছে তাঁদের।
অন্য একাধিক ট্যাক্সি সংগঠন ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানালেও ধর্মঘটের সিদ্ধান্তকে অবশ্য সমর্থন করেনি। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেনস ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে বললেন, ‘‘করোনা আবহে চালকদের আয় কমেছে। ভাড়া বৃদ্ধির দাবি আমরাও জানিয়েছি। তবে আমরা ধর্মঘট ডাকার বিরুদ্ধে। তাতে মানুষের অসুবিধা হয়। তাই এই ধর্মঘট কোনও ভাবেই সমর্থন করছি না।’’ ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ কিছু দিন আগে নিজেদের ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে পুরনো ভাড়া নেওয়ার কথাই জানায় তারা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্যাক্সিচালকদের একাংশের মিটার ছাড়াই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রবণতায় বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা। সকাল বা সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে ট্যাক্সিচালকদের একাংশ মিটার ছাড়াই বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন বলে অভিযোগ। নিউ মার্কেট, পার্ক স্ট্রিট, এক্সাইড মোড়, গড়িয়াহাট ও টালিগঞ্জ-সহ বিভিন্ন জায়গায় এই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। যদিও ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেনস ইউনিয়ন’-এর দাবি, হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন ও বিমানবন্দর এলাকার প্রিপেড ট্যাক্সি বুথে কোথাও অতিরিক্ত ভাড়া নেয় না তারা। চালকেরা মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন জানতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এই সঙ্কটকালে মানুষের উপরে নতুন করে বাড়তি ভাড়ার বোঝা চাপাতে রাজি নয় সরকার। চালকদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন রকম ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এর পরেও ধর্মঘট ডাকা হলে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘ট্যাক্সি অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’র অবশ্য দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে সব ধরনের খরচই বেড়েছে। এই অবস্থায় ভাড়ার বিষয়টি বিবেচনার মধ্যে না আনলে পরিষেবা চালিয়ে যাওয়াই মুশকিল হয়ে উঠবে। মালিক ও চালকেরা একান্ত বাধ্য হয়েই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের যাতে বেশি অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতেই ধর্মঘটের বিষয়টি এত দিন আগে জানিয়ে দেওয়া হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy