স্মৃতিকণা চৌধুরী
দক্ষিণ দমদমের পরে বিধাননগর পুর এলাকা। ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল কেষ্টপুরের বাসিন্দা এক বৃদ্ধার। নাম স্মৃতিকণা চৌধুরী (৭১)। তাঁর পরিবার সূত্রের খবর, জ্বর নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর বাগুইআটির এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই বৃদ্ধাকে। তার পর থেকেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মঙ্গলবার গভীর রাতে স্মৃতিকণাদেবী মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমের উল্লেখ করা হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রেরই খবর, অগস্ট মাস পর্যন্ত কিছু সংখ্যায় জ্বরে আক্রান্তের খবর এসেছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনে মহিষবাথান এবং সংলগ্ন কয়েকটি ওয়ার্ডে মশার প্রকোপ বেড়েছে। জ্বর নিয়ে অনেকে ভর্তি আছেন বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালেও। তাঁদের মধ্যে এক মহিলার রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। তাঁরও বাড়ি মহিষবাথানে। এরই মধ্যে নতুন করে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে পুর প্রশাসনের।
আরও পড়ুন: চিন সম্পর্কে ভবিষ্যতে ভারতের আরও সাবধান হওয়া উচিত
যদিও পুরসভার দাবি, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে এ বছর স্কুল-কলেজ, অফিস, নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে শুরু করে ফাঁকা ফ্ল্যাটে মশার তেল ছড়ানো হয়েছে। সাফ করা হয়েছে ঝোপ-জঙ্গল। সেচ দফতরের সহযোগিতায় খালে জলের প্রবাহ বাড়িয়ে মশার তেল ছড়ানো হয়েছে। কিন্তু জটিলতা কাটেনি মশা মারার ধোঁয়া-যন্ত্র নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পুরসভার অন্দরেই।
আঁতুড়: সল্টলেকের নয়াপট্টিতে এক নির্মীয়মাণ বাড়িতে জমে আছে জল। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার দাবির সঙ্গে একমত বাসিন্দারাও। পাশাপাশি তাঁরা এ-ও বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে ফাঁকা জমি থেকে শুরু করে নির্মীয়মাণ বাড়িতে জল জমে থাকতে দেখা যাচ্ছে। অভিযোগ, পুরসভা সে ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখাচ্ছে। স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সচেতনতার প্রচার থেকে শুরু করে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু জায়গা থেকে জ্বরের খবর এসেছে। সে অনুসারে পদক্ষেপও করা হয়েছে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, জুলাই পর্যন্ত কিছু সংখ্যায় জ্বরের খবর এলেও তা বড় আকার নেয়নি। কিন্তু সম্প্রতি পরপর বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় জল জমে থেকেছে, বেড়েছে মশার দাপট। পাশাপাশি, প্রান্তিক কিছু এলাকায় নির্মাণকাজের জন্য জমা জল থেকেও মশার উৎপাত বেড়েছে। যদিও প্রণয়বাবুর মতে, মশাবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে এই তথ্য ঠিক নয়।
মেয়র পারিষদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে মহিষবাথানে। তবে যে ওয়ার্ডে ওই বৃদ্ধা থাকতেন, সেখানে মশার দাপট বাড়ার তথ্য নেই। কেন এমন হল দেখা হচ্ছে। মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে তাঁদের কিছু অভিযোগ রয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে’’ তবে স্থানীয় সূত্রের একাংশের দাবি, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় নিকাশির অবস্থা তথৈবচ। বেশ কিছু জায়গায় জল জমে থাকে। ওই এলাকা থেকে অনেকেই কাজের সূত্রে দক্ষিণ দমদমে যান। সেখান থেকেও রোগ ছড়াতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy