Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

হাঁটতে গিয়েও গর্তে পড়তে পারি, মন্ত্রী বিঁধলেন বিরোধীদের

সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী ও প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিজেপির দিলীপ ঘোষ— সব বিরোধী দলের নেতারাই বুধবার সেতু রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা এবং সংস্কারের কাজে গাফিলতির প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন।

ঘটনাস্থলে তদারকিতে ফিরহাদ হাকিম। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ঘটনাস্থলে তদারকিতে ফিরহাদ হাকিম। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৯
Share: Save:

বিপদ সঙ্কেত শোনার পরেও মাঝেরহাট সেতু মেরামতির কাজে কেন গাফিলতি হয়েছে, এ বার সেই প্রশ্ন তুলল বিরোধীরা। অন্তত ৬ বার টেন্ডার ডেকেও কেন কাউকে বরাত দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। উল্টোডাঙা, পোস্তা, ফাঁসিদেওয়া ও মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে বিরোধী নেতাদের দাবি, আর সময় নষ্ট না করে বিশেষজ্ঞদের কমিটি গড়ে রাজ্যের সব সেতু ও উড়ালপুলের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হোক।

সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী ও প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিজেপির দিলীপ ঘোষ— সব বিরোধী দলের নেতারাই বুধবার সেতু রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা এবং সংস্কারের কাজে গাফিলতির প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন। বিপর্যয়ের দায় কার, সেই প্রশ্নে শাসক দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘রাস্তায় হাঁটতে গেলেও গর্তের মধ্যে পড়ে যেতে পারি! দায় কার, পরে হবে। আগে তো আহতদের চিকিৎসা হোক। আমার এলাকার লোকই তো মারা গিয়েছেন। এ দোষ আমার না তোমার, নিশ্চয়ই খুঁজব। রাজনীতি খুঁজব না।’’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘২০১৫ সালেই এই সেতুটির মেরামতির প্রয়োজন বলে জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। তার পরে বেশ কয়েকটি টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু কাউকে বরাত দেওয়া হয়নি। নিজেদের লোককে বরাত পাইয়ে দেওয়ার জন্যই কি বিষয়টি এত দিন ফেলে রাখা হয়েছে?’’ দিলীপবাবু জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন। মন্ত্রী পার্থবাবু যদিও পাল্টা কটাক্ষ করেছেন, ‘‘বিজেপি তো একটা সার্কাস পার্টি! এরা এমন একটা ভাব করছে, যেন খুব টেকনিক্যাল লোক! ওদের মধ্যে তো এক জন উচ্চ মাধ্যমিকও পাশ করেনি। দিলীপবাবুকে বলব, এদের গামছা দিয়ে বেঁধে রাখতে! আগে লোক সুস্থ হোক!’’

আরও পড়ুন: অনেক দিনের ‘ক্লান্তি’ অসহ্য হতেই মাঝেরহাটে এই বিপর্যয়!

পূর্ত দফতরেরই আলিপুর বিভাগের কার্যনিবাহী বাস্তুকারের দফতরের গত বছর এপ্রিলের নথি সামনে রেখে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘শুধু উপরে উপরে সারানোর জন্য মাত্র ১৬ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছিল। সেটাও মাঝেরহাট সেতুর পশ্চিম দিকের লেন-সহ শুধু ১.২৮ কিলোমিটার রাস্তার জন্য। তা-ও আবার পূর্তমন্ত্রী জানেন না রক্ষণাবেক্ষণ কার দায়িত্বে ছিল!’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গাফিলতির জন্য দায়ী আধিকারিক বা মন্ত্রী কাউকে যেন আড়াল করা না হয়। মুখ্যমন্ত্রী এত প্রশাসনিক বৈঠক করে নজরদারির কথা বলেন। এই তার নমুনা?’’ তাঁদের দাবি, মুখ্যসচিবকে দিয়ে কমিটি গড়ে বিশেষ লাভ হবে না। বেসরকারি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি বরং সব সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করুক।

এআইসিসি-র তরফে বাংলায় কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈও বলেছেন, ‘‘নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব। রাজ্যে বারবার সেতু ভেঙে পড়ছে! জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ এমন পরিকাঠামো রক্ষায় ঢিলেমি কাদের, তা অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে।’’ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটি নিয়ে সরব হয়েছেন অধীরবাবু ও প্রদীপবাবুও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE