Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Outsider

রাতে বহিরাগত নিষেধ যাদবপুরে

দু’দিন ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-ভাবে গোলমাল-মারামারি চলল, তার তদন্তে কমিটি তো গড়া হয়েছেই। সর্বোপরি ক্যাম্পাসে মদ-মাদক সেবন বন্ধ এবং বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ অবশেষে কিছু কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৪১
Share: Save:

দু’দিন ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-ভাবে গোলমাল-মারামারি চলল, তার তদন্তে কমিটি তো গড়া হয়েছেই। সর্বোপরি ক্যাম্পাসে মদ-মাদক সেবন বন্ধ এবং বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ অবশেষে কিছু কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন।

মঙ্গলবার উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং অন্যান্য আধিকারিক ও শিক্ষকদের বৈঠকে স্থির হয়েছে, রাত সাড়ে ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার লাগানো গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়িকেও ওই সময় ঢুকতে দেওয়া হবে না। মাদকদ্রব্য সেবনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র যে-কড়া নির্দেশ রয়েছে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে। তার পরেও মদ-মাদক সেবন চললে কড়া শাস্তি হবে।

যাদবপুর ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের দাপট এবং মদ-মাদক সেবনের অভিযোগ উঠছে বারবার। গত বছর জুনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বহিরাগত-প্রসঙ্গ তুলেছিলেন যাদবপুরের এক ছাত্র। সেখানে উপস্থিত সুরঞ্জনবাবুর সামনে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, বহিরাগত ঠেকাতে প্রত্যেক পড়ুয়ার পরিচয়পত্র থাকা উচিত। কর্তৃপক্ষ না-চাইলে বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করা হবে না বলেও জানিয়েছিলেন মমতা।

উপাচার্যের বক্তব্য ছিল, সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু বিষয়টি এত দিন বিশেষ এগোয়নি। ক্যাম্পাসে মদ-মাদক সেবন এবং বহিরাগতদের ঘিরে রবি ও সোমবার হস্টেলে মারধর ছাড়াও দু’দল ছাত্রের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। প্রবেশিকা পরীক্ষাকে ঘিরে সাম্প্রতিক টানাপড়েনে এমনিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তার পরে মদ-মাদক আর বহিরাগতদের ঘিরে গোলমাল পরিস্থিতি ঘোরালো করে তুলেছে। শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু একটা করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তাঁদের সিদ্ধান্ত কার্যক্ষেত্রে কতটা বলবৎ হবে, আদৌ পরিস্থিতির উন্নতি হবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত দু’দিনের ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। কমিটিতে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ফ্যাকাল্টির চার শিক্ষক-প্রতিনিধি, চার শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ডিন অব স্টুডেন্টস।’’ সাম্প্রতিক ঘটনায় হস্টেলে নিয়ম ভেঙে থাকার বিষয়টি আবার সামনে এসে পড়েছে। অভিযোগ, এ বারের গোলমালে সোমবার কলা বিভাগের এক ছাত্রকে মেন হস্টেলে টেনে নিয়ে গেলে অন্য তিন ছাত্র তাঁকে বাঁচাতে যান। চার জনকেই নিগ্রহের মুখে পড়তে হয়। যাঁদের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের অনেকেই হস্টেলের আবাসিক নন বলে অভিযোগ।

এ দিন উপাচার্যের ডাকা বৈঠকে প্রতিটি হস্টেলে আবাসিক তালিকা টাঙানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সোমবার হস্টেলে যা ঘটেছে, তার রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে সুপারের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE