মেট্রোর সেই রেক। মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে। সোমবারের নিজস্ব চিত্র।
বেলা ১২টা। অফিস টাইম নয়, তা সত্ত্বেও মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে থিকথিকে ভিড়।
স্টেশনে দাঁড়িয়ে হাঁসফাঁস করছেন যাত্রীরা। দমদমগামী একটি নন-এসি মেট্রো ঢুকতে দেখে, যাত্রীদের মুখগুলো যেন আরও গোমড়া হয়ে গেল। যাঁদের তাড়া রয়েছে, তাঁরা উঠে পড়লেন মেট্রোতে। বাকিরা পরের মেট্রোর অপেক্ষায় স্টেশনে রয়ে গেলেন।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ঢুকল এসি রেক। হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়়লেন যাত্রীরা। কিন্তু কী বিপদ! এসি রেকে তো এসিই চলছে না। কবি সুভাষ থেকেই নাকি এমন অবস্থা। তত ক্ষণে যাত্রীরা গালমন্দ করতে শুরু করে দিয়েছেন। মাঝবয়সি এক জন ব্যক্তি বলে উঠলেন, “এই জন্যেই তো ভাঙচুর হয়। কোনও রক্ষণাবেক্ষণ নেই।”
নিজেদের রাগ মেটাতে যাত্রীরা একে অপরকে বলছেন তাঁদের ক্ষোভের কথা। রবীন্দ্র সরোবর থেকে উঠেছিলেন একদল কলেজ পড়ুয়া। মেট্রোর ভিতরে এই হাল দেখে কালীঘাট স্টেশনে নেমে গেলেন তাঁরা। অবশেষে এক মেট্রো কর্মীর আবির্ভাব। তিনি এ কামরা, ও কামরা ঘুরে কোথায় সমস্যা হয়েছে, খতিয়ে দেখতে যখন শুরু করলেন যখন, তত ক্ষণে মেট্রো রবীন্দ্র সদনে চলে এসেছে।
অবশেষে এসি চালু হল। কিন্তু এসপ্ল্যানেড স্টেশনে ঢুকতে না ঢুকতেই, মেট্রোয় অন্ধকার। এসিও বন্ধ। আতঙ্কে এক যাত্রী বললেন, “কী হল? মেট্রো বন্ধ হয়ে গেল নাকি?’’
আরও দেখুন- হার্দিক হারিকেন সত্ত্বেও যে সব কারণে মুম্বই বধ করল কলকাতা
আরও পড়ুন- দরজায় চুলের ক্লিপ আটকে বন্ধ মেট্রো
কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফের আলো জ্বলে ওঠে। এক যাত্রীর কথায়, “এ ভাবেই তো আমরা যাতায়াত করছি। এসি রেকে এসি নেই। কখনও গেট খোলা অবস্থায় ছুটছে। আলো চলে যাচ্ছে। এই গরম নন-এসি রেকে একই ভাড়া দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। দিল্লির মেট্রোতে উঠেছেন? রেকগুলি দেখেছেন? কলকাতা ভাবতেও পারবে না।”
মেট্রো থেকে নেমে যাত্রীরা রাগ চেপে রাখতে পারেননি। হাতের কাছে মেট্রোর চালককে পেয়ে, রাগ উগরে দিলেন তাদেরই এক জন। তত ক্ষণে মেট্রোর চাকা গড়াতে শুরু করেছে। চালককে বলতে শোনা গেল, “দাদা ঠিক হয়ে যাবে…. কিছু ক্ষণের মধ্যে। চিন্তা করবেন না।”
এ বিষয়ে মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বিষয়টি জানানো হলেও, তিনি কোনও জবাব দেননি।
শনি এবং রবিবার বাদ দিলে সপ্তাহের অন্যান্য দিন গড়ে প্রায় ৩০০টি মেট্রো চলে কবি সুভাষ এবং দমদমের মধ্যে। যাত্রীর সংখ্যা দিনে গড়ে ৬ থেকে ৭ লক্ষ। কিন্তু বরাবরই অভিযোগ ওঠে, যাত্রী স্বাচ্ছন্দের দিকে মন দেয় না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাই এখনও সেই পুরোনো নন-এসি রেকগুলিকেই মেরামতি করে চালানো হচ্ছে। এসি রেকগুলির অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy