বৃহস্পতিবার সারা দিনের পরে সারা রাত কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে থাকা ওই ১৪০ জন বিদেশির অনুযোগ, তাঁদের ক্ষোভ শুনেও কিছু করতে পারেননি বিমানবন্দরের অফিসারেরা।—প্রতীকী ছবি।
আগের দিন সকাল ৬টা ৪০ থেকে পরের দিন দুপুর ১টা ৪২। বিমানবন্দরের লাউঞ্জে ৩০ ঘণ্টারও বেশি অপেক্ষা করতে করতে তাঁরা অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন। সময় মতো খাবার ও জল পেলেও তাতে ক্ষোভ কমেনি।
বৃহস্পতিবার সারা দিনের পরে সারা রাত কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে থাকা ওই ১৪০ জন বিদেশির অনুযোগ, তাঁদের ক্ষোভ শুনেও কিছু করতে পারেননি বিমানবন্দরের অফিসারেরা। কারণ তাঁদেরও হাত-পা বাঁধা। তাই নিয়মের ফাঁসে আটকে পড়া ওই যাত্রীরা বিমানবন্দরের লাউঞ্জে বসেই ঘুমনোর চেষ্টা করেছেন। শুক্রবার দুপুরে তাঁরা উড়ে গিয়েছেন ঢাকায়।
বৃহস্পতিবার ভোরে ইস্তানবুল থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল তুরস্কের একটি বিমান সংস্থার উড়ান। মুখ্য পাইলট ছিলেন রাশিয়ান মহিলা মাইকি ওস্টারম্যান। সঙ্গে আরও দু’জন পাইলট এবং ন’জন বিমানসেবিকা। ঠিক ছিল, ভোর ৫টায় ঢাকায় নামবেন তাঁরা। ৩০ মিনিটের মধ্যে ঢাকা থেকে যাত্রীদের তুলে আবার উড়ে যাবেন ইস্তানবুল।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহে নির্দিষ্ট কিছু ঘণ্টা ওড়ার পরে প্রত্যেক পাইলটকে বিশ্রামে যেতে হবে। একে বলে ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন’। কলকাতা বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, ‘‘মাইকি ঢাকায় নেমে ৪০ মিনিট পরে আবার উড়ে গেলে ওই নিয়মের গেরোয় পড়তেন না। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জেরে তিনি ঢাকার আকাশে কিছু ক্ষণ চক্কর কাটার পরে বাধ্য হয়ে কলকাতায় চলে আসায় তাঁর ডিউটির সময় শেষ হয়ে যায়।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এখানে নেমে জ্বালানি ভরার সময়েই ক্যাপ্টেন মাইকি জানান, তিনি ও বাকি পাইলটেরা অন্তত ২৪ ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে তবেই তাঁরা আবার উড়তে পারবেন। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি পাইলট ও বিমানসেবিকাদের সংশ্লিষ্ট দেশের ‘টেম্পোরারি ল্যান্ডিং পারমিট’ দেওয়া হয়। যা নিয়ে পাইলট ও সেবিকারা শহরে ঢুকতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও মাইকিরা ওই পারমিট পেয়ে শহরের এক হোটেলে চলে যান। কিন্তু যাত্রীদের ভারতে ঢোকার ভিসা ছিল না। তাই বৃহস্পতিবার তাঁদের বিমান থেকে নামিয়ে এনে বিমানবন্দরের টার্মিনালের একতলায় রাখা হয়।
কলকাতায় ওই বিমান সংস্থার কোনও দফতর নেই। এ ধরনের বিদেশি বিমান আচমকা কলকাতায় নামলে একটি সংস্থার তরফে তাদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এত ক্ষণ যখন অপেক্ষা করতে হল, তখন যাত্রীদেরও কেন কোনও হোটেলে নিয়ে যাওয়া হল না? বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, ‘‘এত জন বিদেশিকে শহরে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কে নিত? উড়ান সংস্থার কোনও অফিসার নেই। যে সংস্থা খাবার দিয়েছে, এত জন বিদেশি নাগরিকের দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দেশের দূতাবাস থেকে তাদের নিজস্ব নাগরিককে নিয়ে যেতে চাইলে তবেই ছাড়া হত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy