Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চম বার আর জি কর থেকে ফেরত

প্রেসক্রিপশনে দেওয়া ভর্তির তারিখ অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবারই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মফিজুলকে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর পরিজনেরা। সে দিন শয্যার বদলে প্রেসক্রিপশনে ছাপ পড়ছিল ‘রিগ্রেট, নো বেড ভেকেন্ট’।

আর জি কর থেকে ফিরে গিয়েছিলেন অসুস্থ মফিজুল বিশ্বাস। ফাইল চিত্র

আর জি কর থেকে ফিরে গিয়েছিলেন অসুস্থ মফিজুল বিশ্বাস। ফাইল চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

হাসপাতাল সুপারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও শয্যা না পেয়ে পঞ্চম বার বাড়ি ফিরে যেতে হল যন্ত্রণাকাতর রোগীকে। গত দু’মাসে টানা পাঁচ বার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে ফিরে গেলেন উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার বাসিন্দা, বছর চল্লিশের মফিজুল বিশ্বাস নামের ওই রোগী। শুধু তাই-ই নয়, প্রতি বারের মতো এ বারেও রোগীর পরিবার হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। অভিযোগ, সুপারের অফিস থেকে তাঁদের রীতিমতো অপমান করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সহযোগিতা তো দূর, সরকারি হাসপাতালে বারবার এমন হেনস্থার শিকার হয়ে এ বার তাই মানবাধিকার কমিশনে যাওয়ার কথা ভাবছে ওই রোগীর পরিবার।

প্রেসক্রিপশনে দেওয়া ভর্তির তারিখ অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবারই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মফিজুলকে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর পরিজনেরা। সে দিন শয্যার বদলে প্রেসক্রিপশনে ছাপ পড়ছিল ‘রিগ্রেট, নো বেড ভেকেন্ট’। মফিজুলের পরিবারের দাবি, অস্থি বিভাগের চিকিৎসকেরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, সোমবার এলে তাঁকে ভর্তি করা হবে। ওই দিন হাসপাতাল চত্বরে থাকা আনন্দবাজারের নজরে বিষয়টি এলে সুপারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সুপার মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘রোগীকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। ভর্তির ব্যবস্থা করব। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না।’’

এ দিন মফিজুলের পরিবার সেই কথায় ভরসা করে গিয়েছিলেন সুপারের সঙ্গে দেখা করতে। মফিজুলের দিদি তাজমিরা বিবির অভিযোগ, ‘‘সুপারের অফিসের নিরাপত্তারক্ষী আমাদের দেখাই করতে দেননি। আগের চার বারই এ ভাবেই ফেরানো হয়েছিল। আমরা গরিব। এত টাকা খরচ করে এসেও বারবার ফিরে যেতে হবে কেন? আর নয়। হাসপাতালের বিরুদ্ধে আমরা মানবাধিকার কমিশনে যাওয়ার কথা ভাবছি।’’

এ দিকে মফিজুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত পরিবার। পরিবার সূত্রের খবর, পাঁচ বছর আগে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে কোমরের নীচের ডান দিকের হাড় ভেঙেছিল মফিজুলের। অস্ত্রোপচার করে প্লেট বসানো হয়েছিল তাঁর। দু’মাস আগে সেই জায়গাটি আচমকাই ফুলে উঠতে থাকে। সেই শুরু আর জি করে আসার। প্রথম বার দেখেই চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, প্লেট খুলে গিয়েছে। অস্ত্রোপচার করা জরুরি। পাঁচ বার ঘুরেও সেই ‘জরুরি’ কাজটাই হল না!

এ দিন আনন্দবাজারের পক্ষ থেকে মানসবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মিটিংয়ে ব্যস্ত। রোগীকে পাঠান।’’ এর পরেই রোগীর পরিবার সুপারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসে। কেন মফিজুলকে এ দিন-ও ভর্তি নেওয়া হল না, জানতে ফোন করা হয় সুপারকে। তিনি সেই ফোন ধরেননি এবং মেসেজেরও কোনও উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patient R G Kar Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE