প্রতীকী ছবি।
বিরল বম্বে গ্রুপের রক্ত নিয়ে হয়রানির অভিযোগে ছেদ পড়বে কবে? বাগনানের বাসিন্দা, ১৬ বছরের সঙ্কটজনক রোগীর দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন ছিল। সে জন্য রক্তের জোগাড় করতে গিয়ে কিশোরের পরিজনেদের অভিজ্ঞতার নিরিখে এই প্রশ্নই তুলছেন রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মীরা।
গত ২ অক্টোবর মাচা থেকে পড়ে মাথায় চোট পান বাগনানের রনি দাস। তার পিসি রূপা নস্কর জানান, সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে দেখা যায়, রনির মাথায় রক্ত জমাট বেঁধেছে। স্থানীয় হাসপাতালে কয়েক দিন থাকার পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে রনিকে ভর্তি করানো হয়। রূপা জানান, চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, রক্ত জোগাড় হলে তাঁরা অস্ত্রোপচারের জন্য তৈরি।
রোগীর দাদা অম্বরীশ দাস জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এসএসকেএমের ব্লাড ব্যাঙ্কে রিকুইজিশন স্লিপ জমা করা হয়। কিন্তু সেখানে বম্বে গ্রুপের রক্ত নেই জেনে তাঁরা মানিকতলায় সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে যান। পাশাপাশি পরিজনেদের একটি দল বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কেও বম্বে গ্রুপের খোঁজ চালায়। কিন্তু রাতভর সুরাহা না হওয়ায় শুক্রবার সকালে রোগীর আত্মীয়েরা যান কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ততক্ষণে তাঁদের কাছে থাকা রক্তের নমুনা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন করে নমুনা আনতে ফের এসএসকেএম ছোটেন তাঁরা।
ইতিমধ্যে দেশ জুড়ে থাকা বম্বে গ্রুপের সদস্যদের সংগঠন রনির অবস্থার কথা জানতে পারে। সেই সূত্রে শুক্রবার সন্ধ্যার পরে সক্রিয় হন এ রাজ্যের রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাকর্মীরা। অম্বরীশ জানান, ওই রাতে এসএসকেএমের তরফে বম্বে গ্রুপের রক্তদাতাদের নাম, ফোন নম্বর-সহ তালিকা দেওয়া হয়। তার আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পাথরপ্রতিমার বাসিন্দা এক রক্তদাতা যাতায়াতের খরচ চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত এসএসকেএমের তালিকা থেকে ফোনে দমদম ক্যান্টনমেন্টের স্বপন মান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রক্ত
দিতে রাজি হন। গভীর রাতে রক্ত দেওয়া হয় রনিকে।
রোগীর পরিজনেদের প্রশ্ন, এই তৎপরতা কেন আগে দেখানো হল না? রনির পিসি রূপার বক্তব্য, ‘‘রক্তের অভাবে শনিবারের আগে অস্ত্রোপচার করতে পারেননি চিকিৎসকেরা। নাম-ফোন নম্বরের তালিকা আগে দিলে এটা হত না।’’ রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মী দীপঙ্কর মিত্র বলেন, ‘‘বম্বে গ্রুপ নিয়ে হয়রানি এই প্রথম নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে প্রতিটি ব্লাড ব্যাঙ্কে বম্বে গ্রুপের
রক্তদাতাদের তালিকা থাকার কথা। তা হলে এই দেরি কেন?’’
তৎপরতার অভাবের অভিযোগ অস্বীকার করে এসএসকেএম ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রতীক দে বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে ক্রস ম্যাচিংয়ে বম্বে গ্রুপের কথা জানা গিয়েছিল। গ্রুপ নিশ্চিত করতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ট্রান্সফিউশন বিভাগে নমুনা পাঠানো হয়। নিশ্চিত হওয়ার পরে যা করণীয়, সবই করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy